হিজড়া সেজে ভারতে আত্মগোপন, বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

প্রায় তিন দশক ধরে ভারতের মধ্যপ্রদেশে হিজড়ার ছদ্মবেশে আত্মগোপনে থাকা এক বাংলাদেশি নাগরিককে অবশেষে গ্রেপ্তার করেছে ভোপাল পুলিশ। অভিযুক্তের নাম আব্দুল কালাম (Abdul Kalam)। স্থানীয়দের কাছে ‘নেহা কিন্নর’ নামে পরিচিত এই ব্যক্তি আসলে বাংলাদেশের বাসিন্দা, যিনি জাল পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট ব্যবহার করে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং একাধিকবার বাংলাদেশেও যাতায়াত করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাত্র ১০ বছর বয়সে আব্দুল অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর দীর্ঘ ২০ বছর তিনি মুম্বাইয়ে অবস্থান করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি চলে আসেন মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে, যেখানে তিনি নারীর ছদ্মবেশে ‘নেহা’ নামে পরিচিতি পান এবং নিজেকে একজন হিজড়া হিসেবে উপস্থাপন করে স্থানীয় সমাজে মিশে যান।

গত আট বছর ধরে ভোপালের বুধওয়ারা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন আব্দুল। তার ঘর থেকে আধার কার্ড, ভোটার আইডি, পাসপোর্টসহ একাধিক জাল নথিপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। তদন্তে উঠে এসেছে, এসব নথির সহায়তায় তিনি নির্বিঘ্নে একাধিকবার আন্তর্জাতিক ভ্রমণও করেছেন।

বর্তমানে আব্দুল তালাইয়া থানায় ৩০ দিনের পুলিশ হেফাজতে আছেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ, জাল কাগজপত্র প্রস্তুত ও ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ সন্দেহ করছে, এত বড় আকারে জাল নথি তৈরি ও ব্যবহারের পেছনে কোনো সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত থাকতে পারে।

এই সন্দেহের ভিত্তিতে সাইবার ক্রাইম ইউনিট তার মোবাইল ফোন, কল রেকর্ড, মেসেজ ও ডিজিটাল ডেটা বিশ্লেষণ করছে। লক্ষ্য, এই নেটওয়ার্কে আর কারা জড়িত এবং কীভাবে দীর্ঘ সময় ধরে সে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছিল।

শালিনী দীক্ষিত (Shalini Dixit), ভোপাল পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা, বলেন, “গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা তার পরিচয় যাচাই করি এবং সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পরই তাকে গ্রেপ্তার করি। বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় পুরো অভিযান চালানো হয়েছে সম্পূর্ণ গোপনীয়তায়।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *