আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের সময় প্রায় ৬০ হাজার সেনা সদস্য মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam)।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান তিনি। ব্রিফিংটি অনুষ্ঠিত হয় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সমন্বয় সভা শেষে। সভায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস সচিব বলেন, “সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ৬০ হাজার ট্রুপস নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন। ৫ আগস্টের পর থেকেই তারা মাঠে থাকবেন এবং ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতাসম্পন্ন হবেন। আমরা প্রত্যাশা করছি তারা বলিষ্ঠভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন।”
সভায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচনকালীন সমন্বয় এবং তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ব্রিফিংয়ে শফিকুল আলম আরও বলেন, “ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম যেন আরও শক্তিশালী করা হয়, এবং কোনো দুর্বলতা না থাকে, সে ব্যাপারে বৈঠকে আলাপ হয়েছে। জাতীয় পর্যায় ও স্থানীয় পর্যায়ে সমন্বয় বৃদ্ধির ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশের প্রস্তুতি নিয়েও মিটিংয়ে কথা হয়। প্রেস সচিব জানান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বৈঠকে বলেন, “আগামী সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচন ঘিরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।” এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মিথ্যা তথ্য (মিস-ইনফরমেশন) নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার’ গঠনের চিন্তাভাবনা চলছে। এ বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, “মিথ্যা তথ্য সনাক্ত ও প্রতিহত করতে এ ধরনের একটি কেন্দ্র অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে এবং প্রক্রিয়াটিও এগোচ্ছে।”
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এই সভায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা বিষয়ক নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় অংশ নেয়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
শফিকুল আলম বলেন, “এটা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দ্বিতীয় সমন্বয় সভা। প্রথম সভায় যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো চিহ্নিত করা হয়েছিল, আজকের সভায় তার অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সম্মিলিত প্রস্তুতি ও তৎপরতা প্রয়োজন, এবং আজকের সভা ছিল সেই প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।”