জুলাই মাসজুড়ে বাংলাদেশে চলমান ছাত্র ও জনতার গণঅভ্যুত্থানকে ঘিরে যখন রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত, তখন ড. মাহদী আমিন (Dr. Mahdi Amin) তার ব্যতিক্রমী বক্তব্যে আলোড়ন তুলেছেন। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, জুলাইয়ের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি শহীদ, আহত এবং রাজপথে সক্রিয় ছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরাই। একই সঙ্গে তিনি বলেন, এই আন্দোলনের সূচনায় এক দফা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন তারেক রহমান (Tarique Rahman) স্বয়ং।
ড. মাহদী আমিন বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি তথা চার শতাধিক শহীদের দল বিএনপি (BNP)—যাদের মধ্যে ১৪০ জনেরও বেশি ছাত্রদল (Chhatra Dal) কর্মী ছিলেন। সবচেয়ে বেশি আহত ও পঙ্গু নেতাকর্মী, সবচেয়ে বেশি রাজপথের যোদ্ধাও বিএনপির। সবার আগে, ১৬ জুলাই আবু সাঈদ ও ওয়াসিম আকরামের শহীদ হওয়ার রাতেই এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারেক রহমান।”
তিনি অভিযোগ করেন, এরপর সারাদেশে বিএনপির কার্যালয়গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, পল্টনসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো হয় রেইড। গ্রেফতার করা হয় হাজার হাজার নেতাকর্মীকে, যাদের অনেককেই রিমান্ডে এনে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
ড. মাহদী আমিন তার স্ট্যাটাসে আরও দাবি করেন, “রাজপথে সক্রিয় ছিলেন বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ও পেশাজীবীদের সদস্যরা এবং দেশপ্রেমিক সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে একযোগে অংশ নেন। দেশ-বিদেশের অসংখ্য প্রবাসী দেশপ্রেমিকরাও এতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখেন।”
তবে তার সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য, “বিএনপি বারবার বলে আসছে—এই গণঅভ্যুত্থান সবার; প্রতিটি গণতন্ত্রকামী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক দলের। অথচ এখন এর নেতৃত্ব ও কৃতিত্ব নিয়ে নানা পক্ষ থেকে বিকৃত বয়ান ছড়ানো হচ্ছে। শহীদ-ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করে, রাষ্ট্রক্ষমতার মোহে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা, এই আন্দোলনের মূল স্পিরিটকেই অপমান করছে।”
ড. মাহদীর এই স্ট্যাটাসকে অনেকেই দেখছেন রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্পষ্ট বার্তা হিসেবে, যেখানে আন্দোলনের মালিকানা নিয়ে জটিলতা এবং ‘ক্রেডিট’ বিতর্কের দিকে তিনি ইঙ্গিত করেছেন।
উল্লেখ্য, জুলাই মাসজুড়ে ছাত্র-জনতার অসন্তোষ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং প্রাণহানিতে উত্তাল ছিল রাজপথ। এসব ঘটনার মধ্যেই তারেক রহমানের ‘এক দফা’ কর্মসূচির উল্লেখ এবং বিএনপির আত্মত্যাগের বিবরণ নতুন মাত্রা যোগ করেছে চলমান রাজনৈতিক আলোচনায়।