‘শেখ হাসিনার বিচার না হলে কোনো নির্বাচন হতে পারে না’—এমন স্পষ্ট হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার (Farida Akhter)। শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘ওয়ারিয়র্স অব জুলাই’ আয়োজিত ‘স্যালুট টু জুলাই ওয়ারিয়র্স’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরিদা আখতার বলেন, “শেখ হাসিনার বিচার এই মাটিতে হতেই হবে। তার বিচার ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে পারে না। অন্য কোনো সরকারের হাতে এই বিচার তুলে দেওয়া বা এড়ানো চলবে না।” তিনি এ সময় উপস্থিত রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা মাঠে আছেন শেখ হাসিনার বিচারের জন্য—আমরাও আপনাদের সঙ্গে আছি এবং থাকবো।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু সরকারের পরিবর্তন করে কোনো লাভ হবে না, যদি আমরা রাষ্ট্র ও সংবিধান সংস্কার না করি। যে সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই সংবিধান রেখে কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়।” তার ভাষায়, একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ার জন্য কেবল সরকার বদল নয়, রাষ্ট্র কাঠামোতেও আমূল সংস্কার প্রয়োজন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদ আমাদের চারপাশে বহু রূপে বিরাজ করছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই শুধু রাজনৈতিক দল নয়—সমাজের সব শ্রেণিকে একত্র হয়ে করতে হবে।”
জুলাই আন্দোলনের পেছনের ত্যাগ ও আদর্শের কথা স্মরণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)-এর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই আন্দোলনকে কিছু দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি লুটপাটের হাতিয়ার বানাতে চায়। কেউ কেউ নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে টাকার লেনদেনে জড়িয়ে পড়েছে—এদের আইনের হাতে তুলে দেওয়া জরুরি।”
আলোচনায় অংশ নিয়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, “আহত জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসায় সরকার চরম গাফিলতি করছে। এই আন্দোলনের প্রতিটি রক্তবিন্দুর মূল্য দিতে হবে।” তিনি ঘোষণা দেন, “বাংলাদেশে আর কোনোভাবে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে দেওয়া যাবে না।”
বিএনপি-র ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “দেশে সুশাসনের জন্য একটি নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। পরাজিত শক্তি বিদেশে বসে দেশীয় দোসরদের সঙ্গে নিয়ে দেশকে আবারও অশান্ত করতে চাইছে।” একইসঙ্গে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আহত জুলাই যোদ্ধাদের হাতে শিক্ষাবৃত্তি তুলে দেওয়া হয় এবং ঘোষণা আসে ৫০ জন আহতকে অটোরিকশা দেওয়ার।