মায়ের অসুস্থতার প্রমাণ মেলেনি, পরীক্ষা হচ্ছে না আলোচিত আনিসার

সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসা এইচএসসি পরীক্ষার্থী আনিসা আহমেদ (Anisa Ahmed) অবশেষে তার বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে পারছেন না। মায়ের হঠাৎ স্ট্রোকের কারণে পরীক্ষার দিন এক ঘণ্টা দেরিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানোর যে দাবি তিনি করেছিলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে তার কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়ার যে সরকারি আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের আর কোনো উদ্যোগ থাকছে না।

ঘটনার সূত্রপাত গত ২৬ জুন, এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে। রাজধানীর মিরপুর বাংলা কলেজ কেন্দ্রে কান্নারত এক তরুণীর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ছবির নেপথ্যে ছিলেন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আনিসা আহমেদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়, তার বাবা নেই এবং পরীক্ষার দিন সকালে তার মা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। একাই মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়ে তিনি পরীক্ষাকেন্দ্রে দেরি করে পৌঁছান এবং নিয়ম অনুযায়ী তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।

বিষয়টি দ্রুত জনমত ও সহানুভূতির ঢেউ তোলে। শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (Chowdhury Rafiqul Abrar) তখন ঘোষণা দেন, মানবিক বিবেচনায় আনিসার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আনিসার মায়ের অসুস্থতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের রেকর্ড, মেডিকেল রিপোর্ট বা সাক্ষ্য—কোনোটিই তার দাবিকে সমর্থন করেনি। বরং সোশ্যাল মিডিয়ায় যে বর্ণনা প্রচারিত হয়েছে, তা বাস্তব তথ্যের সঙ্গে মিলছে না।

এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান খন্দকার এহসানুল কবির (Khandaker Ehsanul Kabir) সাংবাদিকদের বলেন, “আনিসার বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেই।” তিনি প্রচলিত নিয়মের কথা উল্লেখ করে বলেন, “কোনো পরীক্ষার্থী প্রথম পত্রে অংশ নিতে না পারলে, দ্বিতীয় পত্রে ৬৬ নম্বর পেলে উভয় পত্রে পাস হিসেবে গণ্য হয়।”

তদন্তের পর আনিসার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে একটি মানবিক আবেদন দিয়ে শুরু হওয়া ঘটনা শেষ হলো সরকারি তদন্তের ফলাফলে এক ভিন্ন বাস্তবতায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *