সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ কিংবা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কোনো আগ্রহ নেই বলে স্পষ্ট জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা বার্নামাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তার মূল কাজ হলো অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার লক্ষ্যমাত্রাকে এগিয়ে নেওয়া, রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়া নয়।
সম্প্রতি মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে বার্নামার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ড. ইউনূস। সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “না, আমি এমন লোক নই। আমার এমন কোনো সুযোগ নেই।” তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত এক বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই আগস্টে সরকার তাদের প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন করছে, এবং ইতিমধ্যে বহু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হয়েছে।
তার অন্যতম বড় অর্জন হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন “ঐকমত্য কমিশন” গঠনকে। ১১টি সংস্কার কমিশনের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই সংস্থাটি নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার প্রতিবেদন তৈরির কাজ প্রায় শেষ করেছে। তার আশা, চলতি মাসের শেষেই প্রতিবেদন জমা পড়বে, যা একটি গ্রহণযোগ্য ও টেকসই নির্বাচন ব্যবস্থা গঠনের পথ খুলে দেবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এই কমিশনের দায়িত্ব শুধু প্রযুক্তিগত সুপারিশ তৈরি করা নয়, বরং রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল বিষয়গুলোতে সব দলকে এক টেবিলে আনা। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন—সংসদ এককক্ষ হবে নাকি দ্বিকক্ষ—এ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কে ঐকমত্য গড়ে তোলা।
ড. ইউনূসের মতে, দেশ এখন সঠিক পথে আছে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, এবারের নির্বাচন হবে আগের তিনটি ‘মিথ্যা’ নির্বাচনের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। “অনেক বছর পর প্রথমবারের মতো জনগণ সত্যিকারের ভোট দেবে। আগের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলো ফাঁকা ছিল, মানুষ জানত না ভেতরে কী ঘটছে,” বলেন তিনি।
এছাড়া তিনি মনে করেন, হাসিনার আমলে যারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন—তাদের জন্য এই নির্বাচন হবে এক ঐতিহাসিক সুযোগ। লাখো ভোটারের কাছে এটি গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার দিন হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।