মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীর বুকে ভেসে উঠল জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলাম লেখক বিভুরঞ্জন সরকার (Bibhuranjan Sarkar)-এর নিথর দেহ। নিখোঁজের একদিন পর শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চর বলাকিয়া এলাকায় মরদেহটি স্থানীয়দের চোখে পড়ে। খবর পেয়ে নৌ–পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম (Masud Alam)। তিনি জানান, সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং তার স্বজনরা ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলের পথে আছেন। কীভাবে তিনি সেখানে পৌঁছালেন এবং তার মৃত্যুর সঠিক কারণ কী—এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
নৌ–পুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন (Alamgir Hossain) বলেন, দেহ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যুর সময়কাল অন্তত একদিন আগে। মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই, তবে কিছুটা বিকৃত হতে শুরু করেছে। তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি বিভুরঞ্জন সরকার। সেইদিনই তার পরিবার রাজধানীর রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশ জানায়, তিনি সেদিন কর্মস্থল বনশ্রীর ‘আজকের পত্রিকা’ কার্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়েছিলেন। তবে পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি অফিসে যাননি। এমনকি মোবাইল ফোনটিও তিনি বাসায় ফেলে যান।
‘আজকের পত্রিকা’ সূত্রে জানা গেছে, ১৬ আগস্ট থেকে তিনি সাত দিনের ছুটিতে ছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বিভুরঞ্জনের ভাই চিররঞ্জন সরকার জানান, “আমার দাদা সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো অফিসে যাবেন বলে বাসা থেকে বের হন। কিন্তু অফিসে যাননি, পরিচিত কারও কাছেও যাননি। রাত ১টা পর্যন্তও তিনি বাসায় ফেরেননি।”
হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া আর পরদিন নদীতে লাশ ভেসে ওঠা—এই ঘটনায় সহকর্মী সাংবাদিক মহলসহ সাধারণ মানুষের মনে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন ও শোকের আবহ। পরিবার, সহকর্মী ও বন্ধুমহলে নেমে এসেছে গভীর শোক।