প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন (A M M Nasir Uddin) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান সরকার তাকে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো প্রকার চাপ দেয়নি। তবে যদি এমন চাপ দেওয়া হয়, তিনি এক মুহূর্তও দ্বিধা করবেন না—পদত্যাগ করবেন, চেয়ারে বসে থাকবেন না। শনিবার (২৩ আগস্ট) সকালে রাজশাহীর আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সিইসি বলেন, ভোট ঘনিয়ে এলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। যারা ব্যালট বাক্স দখলের স্বপ্ন দেখছে, তাদের সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হবে। অস্ত্রের জোরে ভোটে জেতার চেষ্টা করলে তা হবে তাদের জন্য দুঃসংবাদ। স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানান, ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা হলে সেই কেন্দ্রের সম্পূর্ণ ভোট বাতিল করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন হবে কি হবে না—এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যের ভেতর কমিশন প্রবেশ করবে না। বরং প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা মেনে কমিশন এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার চিঠি পাওয়ার পর থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির রমজানের আগে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে নাসির উদ্দিন বলেন, “আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর সিস্টেম সংবিধানে নেই। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কমিশনের কিছু করার সুযোগ নেই। আইন পরিবর্তন হলে সেটি ভিন্ন বিষয়, তবে এখন আমরা বর্তমান বিধানেই চলব।”
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততার বিষয়েও তিনি ব্যাখ্যা দেন। তাঁর ভাষায়, স্ট্রাইকিং ফোর্সের মতো আলাদা কোনো বাহিনী নয়, বরং সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এতে নির্বাচনের সময় জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপারদের পদায়নের বিষয়ে কমিশনের নতুন কোনো পরিকল্পনা নেই।
কমিশনের অন্তর্গত কর্মকর্তাদের প্রসঙ্গেও সিইসি কথা বলেন। বর্তমানে কমিশনের অধীনে প্রায় ৫,৭০০ কর্মকর্তা কাজ করছেন। তাঁরা অতীতের নির্বাচনগুলোতেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে যারা পূর্বে অনিয়মে যুক্ত ছিলেন, তাদের আর রাখা হবে না বলে সতর্ক করেন তিনি।
এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “লীগের এই মুহূর্তে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। তাদের বিচার চলছে। সেই বিচার চলাকালীন সময়ে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এখন দেখা যাক আদালতের রায়ে কী হয়।”
পরে তিনি রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভায় নির্বাচনী প্রস্তুতি ও দায়িত্ব পালনের বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।