‘মবকারীরা’ ৩০০ আসনে ভাগ হয়ে যাবে, তাই ভোটের দিন তেমন সুবিধা করতে পারবে না : মার্কিন দূতকে সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন (A M M Nasir Uddin) জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের নির্বাচন একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। এতে করে যাঁরা ‘মব’ সৃষ্টি করেন, তাঁদের শক্তি ভাগ হয়ে যাবে এবং নির্বাচনের সময় সুবিধা নেওয়া সম্ভব হবে না। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্র্যাসি এন জ্যাকবসন (Tracy Ann Jacobson)-এর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

সিইসি জানান, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, নির্বাচনের সময় ‘মব’-এর প্রভাব এবং কমিশনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা মাথায় রেখে কমিশন ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি জোরদার করেছে। ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে নির্বাচনী চিঠি পাওয়ার পর থেকেই পূর্ণোদ্যমে প্রস্তুতি চলছে, যাতে কমিশনের ওপর কোনো দোষ চাপানো না যায়।

তিনি বলেন, “অতীতে যেমন কমিশনের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এবার আমরা এমনভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি যেন কেউ বলতে না পারে আমরা অপ্রস্তুত ছিলাম। সরকার যখন চাইবে, তখনই নির্বাচন পরিচালনার মতো অবস্থায় আমরা প্রস্তুত আছি।”

বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোভাব সম্পর্কেও আলোচনা হয়। সিইসি জানান, অতীতের মতো এবারও রাজনৈতিক দলগুলো শেষ পর্যন্ত দেশের স্বার্থে সমঝোতায় পৌঁছাবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন, যা ইতিবাচক দিক। এখনো পর্যন্ত তিনি কোনো রাজনৈতিক চাপ অনুভব করেননি এবং সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বলেও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিককে জানিয়েছেন।

গুজব প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, “বাংলাদেশ আসলে গুজবের দেশ হয়ে গেছে। গুজব তৈরির জন্য আলাদা ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। গুজবে কান দেওয়ার প্রয়োজন নেই।” এ সময় কমিশনের সংশোধনী প্রস্তাবগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিকে অবহিত করা হয়েছে।

কালোটাকা প্রতিরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পুরোপুরি বন্ধ করা কঠিন হলেও নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” এছাড়া এবার প্রবাসীদের ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে বড় পরিসরে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, যা অতীতে কখনো হয়নি বলে জানান তিনি।

সম্প্রতি কমিশনের শুনানিতে ঘটে যাওয়া গোলযোগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে সিইসি বলেন, ঘটনাটি নিয়ে জিডি করা হয়েছে এবং পুলিশকে অপরাধীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তিনি জানান, গোলযোগকারীরা পরিচিত কেউ ছিলেন না।

সবশেষে সিইসি নাসির উদ্দীন দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *