দীর্ঘ ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত হলো মিনি পার্লামেন্ট খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ—ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শেষে রাত পৌনে ২টা থেকে বিভিন্ন হলে ধাপে ধাপে ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়।
এই নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা শেখ তানভীর বারী হামীম (Sheikh Tanvir Bari Hamim), যিনি ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন, ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের রায়কে সম্মান জানান। ফলাফল ঘোষণার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, শিক্ষার্থীরা যদি মনে করেন এটাই তাদের সিদ্ধান্ত, তবে তিনি সেই রায় মেনে নিচ্ছেন।
তবে একই সঙ্গে হামীম অভিযোগও তুলেছেন ভোটের অনিয়ম নিয়ে। তার দাবি, সার্বিকভাবে নির্বাচনী পরিবেশ উৎসবমুখর থাকলেও কয়েকটি কেন্দ্রে অনিয়ম ঘটে। বিশেষ করে ভোট গণনায় মেশিনে ত্রুটি, জালিয়াতি ও কারচুপির ঘটনা তিনি উল্লেখ করেন। হামীম লেখেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি মনে করেন এটিই তাদের রায়, তবে আমি সেই রায়কে সম্মান জানাই। আমি শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।”
শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হামীম আরও লিখেছেন, “প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আমি বরাবরই আপনাদের ভালোবাসায় ঋণী। আমি আপনাদের সাথে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও আপনাদের পাশেই থাকবো।”
অন্যদিকে পৃথক এক প্রতিক্রিয়ায় ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান নির্বাচনের ফলাফলকে ‘পরিকল্পিত কারচুপি’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দুপুরের পর থেকেই এই ফলাফল অনুমান করেছিলেন এবং সেটিকে ‘পরিকল্পিত প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এবারের নির্বাচনে ডাকসুর মোট ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ছিলেন ৬২ জন। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নারী প্রার্থীদের মধ্যে ভিপি পদে ছিলেন ৫ জন, জিএস পদে একজন এবং এজিএস পদে ৪ জন।
ভোটার তালিকায় মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ১৮ হাজার ৯০২ জন। নির্বাচনে ৮০ শতাংশের বেশি ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।