দেশে গণতন্ত্র ও ধর্মীয় স্বাধীনতার জন্য বিপজ্জনক শক্তির উত্থান ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী (Ruhul Kabir Rizvi)। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএবি) আয়োজিত এক আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “যে শক্তিগুলোর উত্থান আমরা দেখছি, সেটা দেশের গণতন্ত্রের জন্য বিপদজনক, গণতন্ত্রের চর্চার জন্যও বিপদজনক এবং মানুষের যে ধর্মীয় চেতনা সেটার জন্যও বিপদজনক।”
আলোচনা সভাটি আয়োজন করা হয়েছিল খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)-র শারীরিক অসুস্থতা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর কারামুক্তির ১৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে।
রিজভী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “রাষ্ট্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আঁতাতে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূলের কোনো গভীর নীল নকশা তৈরি হচ্ছে কি না—এটা আজ মানুষের ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে ‘পক্ষপাতদুষ্ট প্রক্রিয়ার’ অভিযোগ তুলে রিজভী জানান, “ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে, যার মালিকের সঙ্গে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।”
তিনি বলেন, দেশের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থিত ভাইস চ্যান্সেলর রয়েছেন এবং এর প্রতিফলন বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে দৃশ্যমান হয়েছে। “একটি ছাত্র সংগঠনকে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য যদি কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং হয়, তাহলে সেটা কিন্তু ধরা পড়বেই,”—জোর দিয়ে বলেন রিজভী।
ছাত্র রাজনীতিকে “একটি উৎসব” হিসেবে আখ্যা দিয়ে রিজভী বলেন, “এই উৎসবে সাবেক শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। ছাত্র প্রতিনিধিরা অংশ নেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কোড অব কন্ডাক্ট তৈরি করে বলেছেন, বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় বিচ্ছিন্ন কোনো দেশ নয়।”
তার অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনকে ‘একচেটিয়া’ করতে সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষের সঙ্গে আঁতাত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভূমিকা পালন করছেন।
সামাজিক বাস্তবতার কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “এদেশের মানুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, আবার নাটক দেখে, গান শোনে—এটাই আমাদের সাংস্কৃতিক বাস্তবতা। কিন্তু আপনি যখন সবকিছু একপাক্ষিক করবেন, তখন ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে। আর ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত রূপ হলো উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও উগ্র ধর্মীয় রাজনীতির বিকাশ।”
তিনি আরও বলেন, “যারা অতীতে অভ্যুত্থানে ছিলেন, তাদের অনেকেই এখন নতুন একটি সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে চান। তারা সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।”