তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন :লুৎফুজ্জামান বাবর

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (Lutfuzzaman Babar)। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (Jahangir Alam Chowdhury)-এর সঙ্গে দীর্ঘ দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান।

প্রায় ১৯ বছর পর আবারও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। বিকেল ৪টা ২২ মিনিটে তিনি মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেন। তবে তাকে সঙ্গ দিতে দেখা যায়নি বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে।

লুৎফুজ্জামান বাবর সম্প্রতি নানা আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসেন ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় খালাস পাওয়ার পর। ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় করা ওই চোরাচালান মামলার আপিল শুনানির রায়ে তিনি ও আরও চারজন খালাস পান। বাকি খালাসপ্রাপ্তরা হলেন রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (Chittagong Urea Fertilizer Ltd – CUFL)-এর তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কেএম এনামুল হক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (DGFI) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব নুরুল আমিন।

রায়ে আরও বলা হয়, বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১৪ জনের মধ্যে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা (ULFA)-র সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ পাঁচজনের দণ্ড হ্রাস করা হয়। পরেশ বড়ুয়ার সাজা কমিয়ে ১৪ বছর এবং বাকি চার আসামি—এনএসআই-এর সাবেক উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, তৎকালীন মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহাম্মদ এবং হাফিজুর রহমানের সাজা ১০ বছর নির্ধারণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে আটক করা হয় ১০ ট্রাক ভর্তি অবৈধ অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র ও চোরাচালান আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বাবরকে ৭৮ দিন রিমান্ডে রাখা হয়েছিল।

২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেপ্তার হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর একাধিক মামলায় তার বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ ঘোষিত হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড এবং একটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। তবে গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র ও জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের পতনের পর মামলাগুলোর আপিল শুনানি শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে একে একে সব মামলায় তিনি খালাস পেতে থাকেন।

২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় ঘোষিত ৮ বছরের কারাদণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় দেওয়া মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পান বাবর। ২১ আগস্টের মামলায়ও তার বিরুদ্ধে ছিল সর্বোচ্চ সাজা।

বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে তার সক্রিয়তা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে তারেক রহমানের দেশে ফেরার ইঙ্গিত সামনে আসার পর। এ নিয়ে বিএনপির ভেতরে-বাইরে উত্তেজনা স্পষ্ট।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *