পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করল জামায়াতে ইসলামী সহ তিন ইসলামী দল

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজন, উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি (পিআর) চালু, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম বন্ধসহ মোট পাঁচ দফা দাবি তুলে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami)।

এই কর্মসূচির সঙ্গে একই দিনে অবস্থান নিয়েছে খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলনও। আরও চারটি দল এতে যোগ দেবে বলে শোনা গেলেও ইতিমধ্যে গণঅধিকার পরিষদ স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা নতুন করে কোনো দলের সঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচিতে যাবে না, বরং ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের দিকেই তাদের লক্ষ্য।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায়, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সারাদেশে জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করবে সংশ্লিষ্ট দলগুলো।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের (Syed Abdullah Md. Taher) বলেন, “যেহেতু দাবিগুলো একই, প্রত্যেকেই নিজের মতো করে কর্মসূচি পালন করবে। এখনো একে যুগপৎ বলছি না।”

তিনি ইসির রোডম্যাপকে একতরফা এবং অন্যায় বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, কালোটাকার ব্যবহার, পেশিশক্তি ও নির্বাচনী অনিয়ম বন্ধে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। মানুষের দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় গণআন্দোলন ছাড়া কোনো পথ খোলা থাকছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ডা. তাহের জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত জামায়াত নেয়নি। বরং তারা দাবি করছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের। তিনি বলেন, “অন্য দলের দাবি যদি যৌক্তিক হয়, আমরা তা সমর্থন করব। আমাদের দাবিও যদি যৌক্তিক হয়, তবে তারা সমর্থন করবে। যুক্তিই ঠিক করবে কোনটা সঠিক।”

পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই দাবি করে তিনি বলেন, এ পদ্ধতিতে ভোট দেওয়া বিদ্যমান পদ্ধতির মতোই সহজ হবে, বরং জনগণের কাছে বিভ্রান্তি বা জটিলতা থাকবে না।

ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আরও পাঁচ মাস সময় আছে উল্লেখ করে তাহের বলেন, এই সময়ের মধ্যে তাদের দাবিগুলো পূরণ করা সম্ভব। আর নির্বাচনের তারিখ পেছানোর জন্য জামায়াত এই দাবিগুলো তুলছে—বিভিন্ন দলের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি প্রশ্ন রাখেন, “কী প্রমাণ আছে যে আমরা নির্বাচন পেছাতে চাই?”

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সম্ভব না জেনেও, পিআর পদ্ধতি নিয়ে কমিশনে কোনো আলোচনা না করে শুধু বক্তৃতা বিবৃতিতে এমন আলাপ তুলে কর্মসূচির ডাক দেওয়াটা মূলত নির্বাচন পিছানোর একটি চক্রান্ত ছাড়া অন্য কিছুই নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *