শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাকসুদ আলমকে ক্লোজড করা হয়েছে। বিএনপির এক নেতাকে গ্রেফতারের পর অর্থের বিনিময়ে অনৈতিক সুবিধা প্রদানের অভিযোগ ওঠার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বিষয়টি শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিশ্চিত করেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) তানভীর হোসেন (Tanvir Hossain)।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক বছর দুই মাসের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি লিটন হাওলাদার (Liton Hawlader)কে গ্রেফতারের পর বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওসি মাকসুদ আলমের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়, আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে তাকে হাজতে না রেখে ব্যারাক থেকে আনা খাট, তোষক ও বালিশ দিয়ে ভিআইপি বিছানা করে দেওয়া হয়। এমনকি মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগও দেওয়া হয় তাকে। এ ঘটনার একাধিক ছবি ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের দায়বদ্ধতা ও নৈতিকতা নিয়ে দেখা দেয় তীব্র প্রতিক্রিয়া।
এছাড়াও ওসি মাকসুদ আলমের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে আসামি ছেড়ে দেওয়া, মাসোহারার মাধ্যমে নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের সহায়তা, মা ইলিশ রক্ষায় অভিযানের সময় নৌকা প্রতি টাকা আদায়, বাজারে অবৈধ কারেন্ট জাল ও পলিথিন ব্যবসায়ীদের সাথে মাসিক চুক্তির মাধ্যমে সুবিধা দেওয়া, এমনকি থানায় গভীর রাত পর্যন্ত বিচার সালিশ চালানোর মতো একাধিক অভিযোগের কথা উঠে আসে। এসব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি জেলা পুলিশের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছায় এবং সমালোচনা শুরু হয়।
প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ওসি মাকসুদ আলমকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর হোসেন বলেন, “গোসাইরহাট থানার ওসি মাকসুদ আলমকে ক্লোজ করা হয়েছে এবং পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। সাধারণ মানুষের ভাষ্য, দায়িত্বে থেকে যদি কেউ অর্থের বিনিময়ে বিশেষ সুবিধা দেন তবে জনগণের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে।