জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)-এর সফরসঙ্গী হয়ে নিউইয়র্কে পৌঁছান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir), এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা। কিন্তু তাদের জন্য ভিভিআইপি সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাধারণ যাত্রীদের মতোই বের হতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের বিক্ষোভ, স্লোগান ও হেনস্তার শিকার হন তারা। এমনকি আখতার হোসেনের ওপর ডিমও নিক্ষেপ করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, ‘একাধিক সতর্কতামূলক নিরাপত্তাব্যবস্থা’ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভিসাজনিত জটিলতায় সফরসঙ্গীদের বিকল্প পথে যেতে হয়। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার ও রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপত্তা সহায়তার অনুরোধ করলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করে। এর ফলে সফরসঙ্গীরা অনিচ্ছাকৃতভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েন।
সোমবার ফ্লাইট থেকে নামার পর ইউনূস বিশেষ নিরাপত্তায় বেরিয়ে যান। কিন্তু বিএনপি, এনসিপি ও জামায়াতের নেতারা সাধারণ পথে বের হওয়ার সময় বিক্ষোভকারীদের মুখোমুখি হন। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রশাসনের ভেতর থেকেই তথ্য ফাঁস করে দেওয়া হয়েছিল এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না। তিনি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
ঘটনার পর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ যুবলীগ কর্মী মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় তিনিই আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়েছিলেন।
সরকারি বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ঘটনার পরপরই প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের নিরাপত্তা বহুগুণে জোরদার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। রাজনৈতিক সহিংসতা কিংবা ভয়ভীতি প্রদর্শনের যেকোনো ঘটনা কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে বলেও জানায় অন্তর্বর্তী সরকার।
এদিকে, ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি লিখেছেন, নিউইয়র্ক বিমানবন্দরের ঘটনা প্রমাণ করেছে যে আওয়ামী লীগ তাদের অন্যায়ের জন্য কোনো অনুশোচনা করে না। পাশাপাশি তিনি আশ্বাস দেন, “আওয়ামী লীগ যত অন্যায় করেছে, সব কিছুর বিচার আইনের মাধ্যমে হবে। দল ও দেশের স্বার্থে ধৈর্য ধরুন।”