দুবাই যাওয়ার কথা বলে ঘর ছাড়লেও শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে গিয়ে নিষিদ্ধঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি)-তে যোগ দিয়েছিলেন মাদারীপুরের তরুণ ফয়সাল মোড়ল (Faisal Moral)। গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কারাক জেলায় সেনা অভিযানে ১৭ জন টিটিপি সদস্য নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশি ফয়সালও। পাকিস্তানি গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশের পর পরিবারের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
ফয়সালের চাচা আব্দুল হালিম জানান, প্রায় দেড় থেকে দুই বছর আগে, ২০২৪ সালের মার্চে দুবাই যাওয়ার অজুহাতে দেশ ছাড়েন ফয়সাল। প্রথমদিকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে জানাতেন তিনি ভারতে আছেন, সেখান থেকে দুবাই যাবেন। এমনকি দেশ ছাড়ার ছয় মাস পর বড় ভাই আরমান মোড়লকে ফোন করে দুবাইয়ে ভালো থাকার কথাও জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিস্তারিত কিছু জানাতে চাননি।
কোরবানির ঈদের সময় পুলিশ ও ডিবি তাদের বাড়িতে গিয়ে ফয়সালের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সন্দেহ বাড়তে থাকে পরিবারের। তখনো তারা নিশ্চিত ছিলেন না, তবে পুলিশ জানিয়েছিল, ফয়সাল পাকিস্তানে রয়েছে। চাচা হালিম বলেন, পরিবার চাইত সে দেশে ফিরে আসুক, টাকাপয়সা পাঠিয়ে ডেকেওছিল। কিন্তু ফয়সাল ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জানায়, অনেক খরচ করে তাকে সেখানে নেওয়া হয়েছে, দেশে আসা সম্ভব নয়।
পরিবারের দাবি, প্রলোভন দেখিয়ে ফয়সালকে জঙ্গি সংগঠনে জড়িয়ে ফেলা হয়। এ কারণে তারা শুধু মরদেহ দেশে ফেরত চান না, বরং যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরও বিচারের দাবি তুলেছেন। ফয়সালের মা চায়না বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলেকে যারা মেরেছে, তাদের বিচার চাই। আর আমি চাই সরকার যেন আমার ছেলের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনে।’
গ্রামে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ফয়সালের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা। বড় ভাই আরমান মোড়ল গণমাধ্যমকে তার ভাইয়ের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এতে পরিবার ও এলাকাজুড়ে শোক নেমে এসেছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (Mohammad Jahangir Alam) জানান, যাতে আর কেউ নিষিদ্ধ সংগঠনে জড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।