গাজার পথে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটক, একটিমাত্র নৌযান রয়ে গেল বাইরে: ইসরায়েল

গাজার উদ্দেশ্যে মানবিক সহায়তা ও কর্মী বহনকারী আন্তর্জাতিক নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার প্রায় সবকটি নৌযান আটক করেছে ইসরায়েল। দেশটির দাবি, বহরের একটিমাত্র নৌযান এখনো ‘সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্র’ থেকে দূরে থাকায় সেটিকে আটক করা হয়নি।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই উদ্যোগকে সরাসরি ‘হামাস-সুমুদ উসকানি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, মানবিক সহায়তার নামে পরিচালিত এই অভিযানের সমাপ্তি ঘটেছে এবং আটক হওয়া সব যাত্রীকে সুস্থ ও নিরাপদ অবস্থায় ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে তাঁদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানায় দেশটি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “অবরোধ ভাঙার চেষ্টা প্রতিহত করা হয়েছে। কোনো নৌযানই সক্রিয় যুদ্ধাঞ্চলে প্রবেশ করতে পারেনি। আরেকটি নৌযান এখনো দূরত্বে অবস্থান করছে। সেটি যদি এগিয়ে আসে, তবে অবরোধ ভাঙার চেষ্টা আবারও প্রতিহত করা হবে।”

ফ্লোটিলা ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় মোট ৪৪টি নৌযান রয়েছে। বহরে ছিলেন সুইডেনের জলবায়ু ও অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ (Greta Thunberg), বাংলাদেশের আলোকচিত্রশিল্পী শহিদুল আলম (Shahidul Alam), দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি এনকোসি জেলিভেলিল ম্যান্ডেলাসহ বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিত্বরা। আটক অভিযানে অংশ নেয় ইসরায়েলের নৌবাহিনীর একাধিক যুদ্ধজাহাজ।

আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম দফায় আটক হওয়া নৌযানগুলো অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। আটক যাত্রীদের প্রক্রিয়া শেষে বিমানে করে ইউরোপে পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েল।

গাজা থেকে প্রায় ১২৯ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে অবস্থান করার সময় গতকাল রাতে প্রথমবারের মতো ফ্লোটিলার গতিপথে সরাসরি বাধা দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মূলত সমুদ্রপথে গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার একটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ। প্রায় ৪০টির বেশি বেসামরিক নৌযানে ৫০০ মানুষ এই অভিযানে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামের নাগরিক ছাড়াও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরা অংশ নিয়েছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *