অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Professor Dr. Muhammad Yunus) বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে ‘নতুন বাংলাদেশের’ সূচনা ঘটেছে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত ঐতিহাসিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এই সনদের ভিত্তিতে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।”
ড. ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের সুযোগে জাতি পুরনো ও অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক পেছনে ফেলে নতুন বিষয়গুলোকে জাতীয় জীবনে যুক্ত করেছে। এই পরিবর্তনের মূল উপাদান হলো সংবিধানের সংস্কার ও সরকার পরিচালনার সঙ্গে সম্পর্কিত কাঠামোগত পরিবর্তন।”
তিনি আরও জানান, “এই পরিবর্তনের ভেতরে অনেক নতুন অধ্যায় যুক্ত হয়েছে। জুলাই সনদ দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ধারা পাল্টে দেবে। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেও আলোচনার জন্ম দেবে।”
সনদ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা সকল রাজনৈতিক দলকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশ গঠনের দায়িত্ব আগামী সরকার নেবে, আর এই জুলাই সনদই সেই প্রস্তুতির অংশ। আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি, যেখানে ঐক্যমতের ভিত্তিতেই আগামীর পথ নির্ধারিত হবে।”
তরুণ প্রজন্মের প্রতি গভীর আস্থা প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে তরুণদের ভূমিকা ছিল অসাধারণ। তারাই নতুন বাংলাদেশ গড়বে, তারাই এই দেশকে নেতৃত্ব দেবে। ১৮ কোটি মানুষের অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে—এই তরুণরাই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ।”
তিনি যোগ করেন, “আজ সারা দুনিয়া বিস্ময়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা আশা করছে, একদিন আমরা আমাদের তরুণদের মাধ্যমে বিশ্বকে সাহায্য করব। পৃথিবীর বহু দেশে এখন তরুণের অভাব; অথচ আমাদের দেশে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই বাস্তবতাই আমাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে—তরুণরা শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা পৃথিবীকেই পরিবর্তনের পথে নিতে পারে।”
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, জাতীয় ঐকমত্যের এই নতুন যাত্রা যেন সফলভাবে এগিয়ে চলে। তাঁর মতে, “এই সনদের মাধ্যমে সৃষ্টি হওয়া নতুন পথরেখা বাংলাদেশকে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে।”
এর আগে আট মাসের দীর্ঘ সংলাপ ও মতৈক্য প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত হওয়া ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করার পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও আনুষ্ঠানিকভাবে সনদে স্বাক্ষর করেন।