নির্বাচন সামনে রেখে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission of Bangladesh)। সোমবার (২০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সভাকক্ষে এ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছে ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, আগামীকালের এই সভায় উপস্থিত থাকবেন সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপি, ডিজিএফআই, এনএসআই, এনটিএমসি, র‍্যাবের মহাপরিচালকসহ স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) এবং সিআইডির অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শকরাও।

সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নির্বাচন কমিশন মোট ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে। এসব আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো—

ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও পরিবেশ: ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নির্বাচনী এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা তৈরি।

সমন্বয় ও সুসংহতকরণ: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর কার্যক্রমে পারস্পরিক সমন্বয় ও তথ্য বিনিময় জোরদার করা।

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কৌশল নির্ধারণ।

অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার রোধ: অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহ ও ব্যবহারের ওপর কঠোর নজরদারি এবং তা দমনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।

সাইবার নিরাপত্তা: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।

বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা: নির্বাচনে আগত বিদেশি সাংবাদিক ও প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

সশস্ত্র বাহিনীর মোতায়েন পরিকল্পনা: নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন ও দায়িত্ব বণ্টন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা।

দুর্গম এলাকায় সহায়তা: পার্বত্য ও দুর্গম এলাকায় নির্বাচনী সামগ্রী পরিবহন ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের যাতায়াতে হেলিকপ্টার সহায়তা নিশ্চিত করা।

ড্রোন নিষিদ্ধকরণ: নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রের আশপাশে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

এ ছাড়া বৈঠকে দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে ভোটার সংখ্যা ও ভোটকেন্দ্র সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান উপস্থাপন করা হবে। সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *