জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP) দাবি করা শাপলা প্রতীক ইস্যুতে ফের নতুন করে সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। কমিশন জানিয়েছে, শিগগিরই আইন ও বিধি পর্যালোচনা করে এই বিতর্কিত প্রতীক ইস্যুর নিষ্পত্তি করা হবে।
এর আগে এনসিপিকে বিকল্প প্রতীক বাছাইয়ের জন্য ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল ইসি। নির্ধারিত সময়ের শেষ দিনেই, রোববার, দলটির একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে এসে ফের শাপলা প্রতীক বরাদ্দের আবেদন করে। এনসিপির এই অনড় অবস্থানকে ঘিরেই কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিষয়টি আবারও পর্যালোচনার।
সোমবার (২০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানানো হয়, এনসিপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিষয়টি কমিশনের কাছে পুনরায় উপস্থাপন করা হবে এবং কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে কোন প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “আমরা এনসিপিকে ৫০টি প্রতীকের একটি তালিকা দিয়ে সেখান থেকে বেছে নিতে বলেছিলাম। শেষদিন তারা এসে ফের শাপলা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছে। এখন কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে তাদের কী দেওয়া হবে।”
যেসব প্রতীক থেকে এনসিপিকে পছন্দ করতে বলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—আলমিরা, খাট, উটপাখি, ঘুড়ি, কাপ-পিরিচ, চশমা, দালান, বেগুন, চার্জার লাইট, কম্পিউটার, জগ, জাহাজ, টিউবওয়েল, টিফিন ক্যারিয়ার, টেবিল, টেবিল ঘড়ি, টেলিফোন, ফ্রিজ, তবলা, বক, মোরগ, কলম, তরমুজ, বাঁশি, লাউ, কলস, চিংড়ি, থালা, বেঞ্চ, লিচু, দোলনা, প্রজাপতি, বেলুন, ফুটবল, ফুলের টব, মোড়া, বালতি, কলা, বৈদ্যুতিক পাখা, মগ, মাইক, ময়ূর, মোবাইল ফোন, শঙ্খ, সেলাই মেশিন, সোফা, স্যুটকেস, হরিণ, হাঁস ও হেলিকপ্টার।
তবে এই বিপুল প্রতীকের তালিকা থেকেও এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়েই অনড় অবস্থান ধরে রেখেছে। রোববার সকালে এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শাপলা প্রতীক চাইতে আবার আবেদন জমা দেয়। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কমিশন যেকোনো প্রতীক চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, তারা তা গ্রহণ করবে না।
এ প্রসঙ্গে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা দেখেছি যে নির্বাচন কমিশন একটি স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে এই সিদ্ধান্তগুলো আসলে চাপিয়ে দেওয়া। প্রতীক বাছাইয়ে ইসির চাপিয়ে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নেব না।”
এনসিপির অবস্থান, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং বিতর্কিত প্রতীক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই ইস্যু রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেই সিদ্ধান্ত কীভাবে গ্রহণ করে এনসিপি।