বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় মনোনয়ন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সড়কে নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছেন। সোমবার রাতে পৃথক দুটি স্থানে, ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে ও ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা। এতে করে চরম যানজট ও অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
শিবচরে এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধে উত্তপ্ত রাত
মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনে বিএনপি (BNP)-র মনোনয়ন ঘোষণার পরেই রাত ৮টার দিকে ঢাকা–ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর গোলচত্বরে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু করেন মনোনয়নবঞ্চিত জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা। দাবি ছিল—প্রকাশিত প্রার্থী কামাল জামানকে বাদ দিয়ে লাভলু সিদ্দিকীকেই প্রার্থী করা হোক।
প্রত্যক্ষদর্শী ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, গোলচত্বরে শত শত মানুষ লাভলু সিদ্দিকীর পক্ষে স্লোগান দেন এবং কাঠ ও টায়ার জ্বালিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেন। পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও জনসংখ্যার তুলনায় তারা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। ফলে দুই পাশে আট কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে রাত ৯টা ৫০ মিনিট থেকে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয় বলে হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক অবরোধে আসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা
একই দিন সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের মনোনয়ন নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী (Aslam Chowdhury)-র সমর্থকেরা। ভাটিয়ারী শহীদ মিনার এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।
বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন এবং রাস্তার বিভিন্ন অংশে অবরোধ গড়ে তোলেন। রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল ও প্রতিবাদ অব্যাহত ছিল।
সোমবার বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। সীতাকুণ্ড আসনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে প্রার্থী করা হয়েছে। এতে বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় নেতা আসলাম চৌধুরী, যার বিরুদ্ধে আগে থেকেই দলীয় কোন্দল ও বিতর্ক রয়েছে।
এমন ঘটনায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ্যে এসেছে। নির্বাচনের আগে এই ধরনের সংঘাত দলের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


