“২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হতে হবে”—নয়াপল্টনে ফখরুল

নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে—এমন দাবি তুলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) বলেছেন, “নির্বাচন ও গণভোট একদিনেই হতে হবে, আর সেই দিন হতে হবে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এর ব্যত্যয় হলে বাংলাদেশের মানুষ তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।”

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র‍্যালিপূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

“আদর্শিক আন্দোলনের রূপকার তারেক রহমান”

সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)–কে ‘আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা’ হিসেবে তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “সংস্কারের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন তারেক রহমান। সেই প্রস্তাবনাগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং সেই কাজ তারা শুরু করলে আমরা তাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি।”

তিনি জানান, প্রায় এক বছর ধরে এই সংস্কার সনদ তৈরির কাজ চলে এবং গত ১৭ অক্টোবর সব রাজনৈতিক দল মিলে যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়, সেগুলোর ওপর স্বাক্ষর করেন তারা। তবে যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল, তা সম্মেলনের মাধ্যমে খোলাখুলি প্রকাশ করা হয়।

“উপদেষ্টা কাউন্সিল হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত দিল, এটা কেমন প্রক্রিয়া?”

বিএনপি মহাসচিব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “পরবর্তীতে আমরা দেখলাম, উপদেষ্টা কাউন্সিলের একজন সদস্য হঠাৎ করে প্রেস কনফারেন্স করে জানালেন—রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিনের সময় দেওয়া হবে নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। তাহলে এতদিন কমিশনে বসে যে ঐকমত্য তৈরির প্রক্রিয়া চলল, সেখানে সব দলের প্রতিনিধি থাকলেও সেটার কী হলো?”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বহু টাকা খরচ করে যে কাজ করা হলো, তা কোনো সমস্যার সমাধান না করেই এখন আবার নতুন করে আলাদা চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।”

“নির্বাচনের আগেই গণভোট? না, একসঙ্গেই করতে হবে”

একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনপূর্ব গণভোট চেয়ে যে চাপ সৃষ্টি করছে, সে প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা স্পষ্ট বলেছি—গণভোট ও নির্বাচন একই দিনেই হতে হবে। আলাদা দিনে করলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে এবং নির্বাচনের গুরুত্ব কমে যাবে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “আজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই অন্তর্বর্তী সরকার, যাদের আমরা সমর্থন দিয়েছি, তারাই এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে যা নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও ধারাবাহিকতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।”

“নির্বাচনে যাব, বিজয়ী হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ব”

মির্জা ফখরুল দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলেন, “আমরা এই নির্বাচনে অংশ নেব এবং ইনশাআল্লাহ বিজয়ী হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ব।” তিনি যুবকদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাব।”

তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলন শুধু একটি রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য নয়, এটা হচ্ছে জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন। আমরা সেই লক্ষ্যেই অটল আছি।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *