শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ১৭ নভেম্বর

শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল ১৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে।

২০১৪ সালের বিতর্কিত ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ সময় দেশজুড়ে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এই মামলা করা হয়েছিল। এতে আসামি করা হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (Asaduzzaman Khan Kamal) এবং পুলিশের তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন (Chowdhury Abdullah Al-Mamun)-কে।

এই মামলায় ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। ওইদিন ট্রাইব্যুনাল ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করলেও পরে তা পেছিয়ে ১৭ নভেম্বর করা হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাঁরা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ সাজা, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তাঁদের খালাস চেয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন।

এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের জবানবন্দি, অডিও-ভিডিও, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং জব্দ করা গুলি। মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী, প্রত্যক্ষদর্শী এবং সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

মামলায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। অপর দুই আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় চলতি বছরের ১ জুন। পরবর্তীতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েও তাঁদের উপস্থিত করা যায়নি। তাই ট্রাইব্যুনাল ২৪ জুন তাঁদের পক্ষে আমির হোসেনকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত করে।

রায়কে ঘিরে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মূল ফটকে মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই ট্রাইব্যুনালের ভেতরে-বাইরে অবস্থান করছেন অর্ধশতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।

বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের আরও দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই রায় আন্তর্জাতিক মহলেও বিশেষ মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *