জুলাইয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র রায়কে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতা ও আতঙ্ক সৃষ্টির ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। শনিবার রাত থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও কুষ্টিয়ায় অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্তত নয়টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও চলছে।
ঢাকায় বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন এক ব্যক্তি। রাজধানীর সেন্ট্রাল রোড এলাকায় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (Syeda Rizwana Hasan)-এর বাসার সামনেও দু’টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময়ে বিভিন্ন স্থানে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ এবং জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক (Grameen Bank)-এর ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে।
ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরে মহাসড়কে গাছ ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ তৈরি করেছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে সাময়িক সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
রবিবার রাত ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে রাজধানীর তিতুমীর কলেজের মূল ফটক, আমতলী মোড় এবং মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে পানির ট্যাংকের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ঠিক রাত ৯টার পর শ্যামপুর এলাকায় তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের ফলে মেহেদী নামে একজন আহত হন। রাত ১০টার দিকে গাবতলী ও মহাখালী রেলক্রসিংয়ের কাছেও বিস্ফোরণ শোনা যায়।
ঢাকার বাইরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বারতোবা বাজারে শনিবার রাত দুইটার দিকে গ্রামীণ ব্যাংকের একটি শাখায় তিনটি পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে ব্যাংকের সাইনবোর্ডের অংশ পুড়ে যায়। টঙ্গীতেও রবিবার ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
ধামরাই ও সাভারে রাতভর এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। কোনো বাসেই হতাহতের খবর নেই। রবিবার রাত প্রায় ১০টার দিকে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডের কাছে পার্ক করা ডি-লিংক পরিবহনের বাসে তিন দুর্বৃত্ত আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে পেছনের জানালা ভেঙে বাসে আগুন দেয় এবং দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা পানি ও বালু ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, তবে বাসের ভেতরের অধিকাংশ আসন পুড়ে যায়।
সাম্প্রতিক এসব ধারাবাহিক নাশকতায় স্পষ্ট হচ্ছে—রায় ঘোষণার আগে দেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত ও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে, আর নাগরিকদের মনে দানা বাঁধছে গভীর উদ্বেগ।


