মঞ্জু-আনিসুলের নেতৃত্বে যে ১৬ দল নিয়ে নতুন রাজনৈতিক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন এক রাজনৈতিক জোট গঠনের পথে এগোচ্ছে জাতীয় পার্টি-জেপি (Jatiya Party-JP) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (Anwar Hossain Manju) ও জাতীয় পার্টি-জাপা (Jatiya Party-JAPA) এর একাংশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (Anisul Islam Mahmud)। সম্ভাব্য নাম—‘জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক জোট’। মোট ১৬টি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে গঠিত এই জোটের মধ্যে পাঁচটি দল রয়েছে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত।

জোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (ABM Ruhul Amin Howlader)। পাশাপাশি জোটে অন্তর্ভুক্ত দলগুলোর নেতাদের সমন্বয়ে গঠন করা হচ্ছে একটি লিয়াজোঁ কমিটি, যা রাজনৈতিক ও নির্বাচনি কার্যক্রমে সমন্বয় করবে।

৬ ডিসেম্বর রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটবে এই জোটের। এর আগেই গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে আয়োজিত বৈঠকে ১৬ দলের নেতারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন।

রুহুল আমিন হাওলাদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, উদার গণতন্ত্র ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়েই আমরা বৃহত্তর জোট গড়ার লক্ষ্যে একত্র হয়েছি। ১৬টি দল একমত হয়েছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ থাকলে আমরা নির্বাচনে অংশ নেব।”

তবে তার দাবি, “বর্তমানে দেশে অবাধ নির্বাচনের মতো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি।”

জোটে অংশ নেওয়া অন্যান্য দলগুলোর মধ্যে রয়েছে:
– গোলাম সারোয়ার মিলনের জনতা পার্টি বাংলাদেশ
– এ এন এম সিরাজুল ইসলামের বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মতিন)
– অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদের বাংলাদেশ মুসলিম লীগ
– শেখ সালাউদ্দিন সালুর ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)
– মাওলানা আশরাফুল হকের বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি
– সেকান্দার আলী মনির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ লেবার পার্টি
– আবু নাসের ওহেদ ফারুকের বাংলাদেশ ইসলামিক জোট
– মেজর (অব.) আমীন আহমেদ আফসারীর জাতীয় সংস্কার জোট
– শেখ মুস্তাফিজুর রহমানের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)
– মো. আখতার হোসেনের বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি
– মো. মোশারফ হোসেনের সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি
– মহিউদ্দিন বাবলুর জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)

এই জোটের মূল লক্ষ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ হলেও, তার চেয়েও বড় লক্ষ্য রাজনীতিতে একটি নতুন সমমনা শক্তির জন্ম দেওয়া—যা উদারপন্থী ও জাতীয়তাবাদী চেতনার ওপর ভিত্তি করে গঠিত।

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, “বাংলাদেশ সৃষ্টির সময় থেকেই আমি ঐক্যের পক্ষে। সামরিক শাসন, নির্বাচিত-অনির্বাচিত সরকার সব দেখেছি। আমি উদারপন্থী রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তাই সাহস করে এই জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি। এটা সক্রিয় রাখা চ্যালেঞ্জ হবে ঠিকই, তবে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে আমরা অনেকদূর যেতে পারব।”

সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নতুন এ জোট গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সরকারবিরোধী এবং তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গঠনের প্রচেষ্টায় এ ধরনের জোট কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে—তা সময়ই বলে দেবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *