জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরও ৩৬টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি (Bangladesh Nationalist Party)। বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার (Khaleda Zia) রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) এই তালিকা প্রকাশ করেন।
নতুন তালিকায় পরিবর্তন এসেছে মাদারীপুর-১ আসনে। আগে ঘোষিত প্রার্থী কামাল জামাল মোল্লার নাম স্থগিত করে সেখানে নতুন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রথম পর্যায়ের ২৩৭টি আসনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের এই ৩৬টি যুক্ত হয়ে মোট ২৭২টি আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করল বিএনপি। এখনো বাকি রয়েছে ২৮টি আসন।
তবে এই নতুন তালিকায়ও আলোচিত বিএনপি নেত্রী ও দলের সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা (Rumeen Farhana) মনোনয়ন পাননি। এই নিয়ে দুই দফাতেই তাকে বাদ রাখা হলো, যা রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসন থেকে কোনো প্রার্থী না দেওয়ায় গুঞ্জন উঠেছে, সেটি হয়তো শরিক দলের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
প্রথম দফার ঘোষণার পর থেকেই রুমিন ফারহানাকে নিয়ে নানা গুঞ্জন ছিল। ধারণা করা হচ্ছিল, দ্বিতীয় দফার তালিকায় তার নাম আসতে পারে। কিন্তু এবারে তার অনুপস্থিতি নতুন করে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—বিএনপি শেষ পর্যন্ত তাকে মনোনয়ন দিচ্ছে না কেন?
সম্প্রতি এক টিভি টকশোতে রুমিন ফারহানা বলেন, “মনোনয়ন না পেলেও আমি মাঠ ছাড়ব না। জনগণ যদি আমাকে চায়, তাহলে আমি নির্বাচন করতেই হবে—সে হাস মার্কায় করি, বা ধানের শীষ মার্কায়।” তিনি আরও বলেন, “নেতাকর্মীরা যেভাবে নিজেদের ঘাম ও শ্রম দিয়ে সংগঠন তৈরি করেন, তাদের আবেগকে সম্মান জানানো উচিত। একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী এক নম্বর, দুই নম্বর বা তিন নম্বরে থাকতেই পারেন। কিন্তু সেই প্রত্যাশা অস্বাভাবিক কিছু নয়।”
বিশ্বস্ত সূত্র অনুযায়ী, রুমিন ফারহানা এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী। তার গ্রামের বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বিধ্বস্ত গ্রামে হলেও বর্তমানে তিনি সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর এলাকায় বসবাস করেন। প্রশাসনিক বিভাজনের ফলে বিজয়নগর উপজেলা এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের অন্তর্গত হলেও এক সময় এটি ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অংশ।
সবমিলিয়ে, রুমিন ফারহানার মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপির অভ্যন্তরে একটি নীরব আলোড়ন তুলেছে। শেষ পর্যন্ত তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে কি না—তা এখন দলের তৃতীয় ধাপের ঘোষণার দিকেই তাকিয়ে আছে রাজনৈতিক মহল।


