রাজনৈতিক অঙ্গনের উত্থান-পতনের এ সময়টিতে দেশের সার্বিক স্বার্থ বিবেচনায় নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা আসলে কার আছে—এ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও টেলিভিশন উপস্থাপক জিল্লুর রহমান (Zillur Rahman)। তাঁর মতে, কার হাতে আছে প্রকৃত জনসমর্থন, কার সংগঠন শক্তিশালী, আর কোন শক্তিকে এ মুহূর্তে সমর্থন দেওয়া যুক্তিযুক্ত—এসব বিষয় আরও ঠাণ্ডা মাথায় দেখা জরুরি।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিনি এই মন্তব্য করেন। ভিডিওতে তিনি শুরুতেই বলেন, নির্বাচনের তফসিল ইতোমধ্যে ঘোষণা হয়েছে, ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছেন, নির্বাচন নিয়ে অনেকেই আশাবাদী; তবে এখনো পর্যবেক্ষণের যথেষ্ট সময় রয়েছে—এই নির্বাচন আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না, আর হলেও তার চরিত্র কেমন হবে তা নিশ্চিত নয়।
জিল্লুর রহমান বলেন, একজন নিরপেক্ষ মানুষও একটি রাজনৈতিক দলের ভালো কাজকে সমর্থন করতে পারেন, আবার খারাপ কাজের সমালোচনাও করতে পারেন। নির্দিষ্ট একটি মুহূর্তে রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে কোনো একটি শক্তিকে সমর্থন করা প্রয়োজন হতে পারে—এটা অস্বাভাবিক নয়।
তফসিল ঘোষণার আগেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তথাকথিত “অনুপস্থিত নৌকার ছায়ায়”। আওয়ামী লীগ এখন কার্যক্রমে নিষিদ্ধ, দলটির নিবন্ধন যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলার জটিলতায় ঝুলে রয়েছে। কিন্তু মাঠে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন—নিষিদ্ধ নৌকার প্রতীকই এখন সবচেয়ে প্রত্যাশিত সম্পদে পরিণত হয়েছে। এমনকি বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মতো দলগুলো পর্যন্ত নীরব দর-কষাকষিতে নেমেছে এই প্রতীকের প্রতি ঝোঁক থেকে।
বিশ্লেষকের মতে, এই প্রতীকভিত্তিক ভোটের ভেতরেই রয়েছে একাধিক স্তর। একদিকে আওয়ামী লীগের কট্টর আদর্শিক সমর্থকরা আছেন—যারা হয়তো ভোট বর্জন করবেন অথবা হতাশায় ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। অন্যদিকে রয়েছে বৃহত্তর অংশ—যারা ব্যক্তিগত সম্পর্ক, প্রশাসনিক সুবিধা কিংবা তুলনামূলক কম ক্ষতি বিবেচনায় নৌকায় ভোট দিতে আগ্রহী। পাশাপাশি সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ভোটারদের একটি অংশ বহু বছর ধরেই নিরাপত্তার রাজনীতির কারণে আওয়ামী লীগের দিকেই ঝুঁকে থেকেছেন।


