ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই বিপ্লবের অন্যতম নেতা শরীফ ওসমান হাদির ওপর গু’\লি চালিয়ে হ’\ত্যা’\চেষ্টার ঘটনায় তৎপর হয়ে উঠেছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গোটা ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও দেশবিরোধী শক্তির ইন্ধন রয়েছে বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে।
এই গু’\লি’\বিদ্ধ হামলার ঘটনায় সবচেয়ে বেশি সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে ইসমাইল হোসেন সম্রাট (Ismail Hossain Samrat) নামের এক সময়ের আলোচিত যুবলীগ নেতার দিকে, যিনি এখন দল থেকে বহিষ্কৃত এবং ভারতের দিকে পালিয়ে গেছেন বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত শনিবার পুরোদিনজুড়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা। পুলিশ সূত্র বলছে, এই গু’\লি’\চালনার ঘটনায় মূলত জুলাই বিপ্লব এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে একটি ভীতি সৃষ্টির অপচেষ্টা ছিল। হাদির ওপর হামলার পর আন্দোলন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) (Dhaka Metropolitan Detective Branch) জানায়, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভীতি ছড়ানোর লক্ষ্যেই এ হামলা চালানো হয়েছে এবং এতে হামলাকারীরা কিছুটা সফলও হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে যেন এমন হামলা না হয়, সেজন্য ঢাকাসহ সারাদেশে রেকি তল্লাশির প্রস্তুতি চলছে।
একইসঙ্গে জামিনে থাকা যেসব সন্ত্রাসীরা বর্তমানে কারাগারের বাইরে আছে, তাদের আলাদা তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে পুলিশ। সব বিমানবন্দরে সতর্কতা বার্তা পাঠানো হয়েছে যাতে সন্দেহভাজন হামলাকারীরা দেশত্যাগ করতে না পারে। সীমান্তেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ফয়সাল করিম মাসুদ (Foysal Karim Masud) নামের এক নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ক্যাডারকে শনাক্ত করেছে। ফুটেজে দেখা যায়, মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা একজন ব্যক্তি হাদির ওপর গু’\লি চালায় এবং তার মুখাবয়বের সঙ্গে ফয়সালের চেহারা মিল রয়েছে।
ফয়সালের বিরুদ্ধে এর আগেও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় একটি অফিসে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাই ও ডাকা’\তির ঘটনায় র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। এছাড়া তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রহস্যজনক লেনদেনের তথ্যও পেয়েছে গোয়েন্দারা, যা তদন্তের অংশ হয়ে উঠেছে।
সূত্রমতে, হাদির ওপর গু’\লি’\চালনার ঘটনায় মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করছে ডিবি ও র্যাব। কে, কেন এবং কী উদ্দেশ্যে এ গু’\লি চালানো হয়েছে, তা জানতেই চলছে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তথ্য বিশ্লেষণ। যদিও এখনো থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি, তবে পুলিশ জানিয়েছে, মামলা প্রক্রিয়াধীন।
এই পুরো চক্রের সঙ্গে আবারও উঠে আসছে যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা সম্রাটের নাম। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে সম্প্রতি যাবজ্জীবন সাজাও হয়েছে। সম্রাটের নেতৃত্বে পতিত শাসকের পক্ষ থেকে নির্বাচনী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হাদির ওপর গু’\লি চালানো হয়েছে বলেও সন্দেহ করছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ভারত থেকে আওয়ামী লীগপন্থী একটি গোপন গোষ্ঠীও এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকতে পারে বলে তথ্য পাচ্ছে গোয়েন্দারা। তাদের দাবি, হাদিকে গু’\লি’\বিদ্ধ করার মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করতে ও জুলাই আন্দোলনের মনোবল ভেঙে দিতে চেয়েছে হামলাকারীরা।


