প্রায় দুই দশক পর নির্বাসিত জীবন শেষে বাংলাদেশে ফিরছেন তারেক রহমান (Tarique Rahman)। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গুলশানে তার জন্য নতুন বাসভবন, অফিস এবং নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি নতুন কার্যালয় প্রস্তুত করেছে বিএনপি (BNP)। সবকিছু ঘিরে দলটির মধ্যে এখন ব্যাপক প্রস্তুতি ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গুলশান এভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাড়িটিতে উঠছেন তারেক রহমান। এই বাড়িটির পাশেই খা’\লে’\দা জিয়া থাকেন গুলশানের ফিরোজা বাসভবনে। ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে বেগম খা’\লে’\দা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল বাড়িটি। কিছু মাস আগে এই বাড়ির দলিল হস্তান্তর করেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রিজু। বর্তমানে বাড়িটিতে চলছে শেষ পর্যায়ের সাজসজ্জার কাজ।
বাসার সামনে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা ছাউনি, স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মীরা নিশ্চিত করেছেন, “তারেক রহমান সাহেব এখানে থাকবেন, সে কারণে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।”
এছাড়া গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তৈরি হয়েছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য আলাদা চেম্বার। একই রকম চেম্বার তৈরি করা হয়েছে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালেতেও, যেখানে এর আগে খা’\লে’\দা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)-এর আলাদা চেম্বার ছিল।
গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি বাড়িটি নতুনভাবে ভাড়া নেওয়া হয়েছে বিএনপির অফিস হিসেবে। চারতলা এই ভবনে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, রয়েছে ব্রিফিং রুম, গবেষণা সেল এবং নির্বাচন পরিচালনার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের যাবতীয় অবকাঠামো।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে এই নতুন অফিস থেকেই সংবাদ সম্মেলন করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন। তিনি জানান, তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে আয়োজিত হচ্ছে ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি জাতীয় রিল মেকিং প্রতিযোগিতা। সংবাদ সম্মেলনে মাহদী বলেন, “এটি বিএনপির একটি কার্যালয়, এখান থেকেই নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা নিশ্চয়ই অবগত যে আগামী ২৫ ডিসেম্বর ইনশাআল্লাহ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান বাংলাদেশে ফিরবেন। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে গণমানুষের মাঝে রয়েছে তীব্র আবেগ, আকাঙ্ক্ষা ও আগ্রহ।”
দীর্ঘ ১৮ বছর লন্ডনে নির্বাসিত থাকার পর তার এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। খা’\লে’\দা জিয়ার পর বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে কেন্দ্র করেই এই মুহূর্তে চলছে দলীয় প্রস্তুতির চূড়ান্ত ধাপ।
গতকাল সোমবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভায় তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানানোর পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমাদের নেতার অপেক্ষায় আছে দেশবাসী। সেদিন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। আমরা সেই প্রস্তুতির কাজ করছি।”
শায়রুল কবির খান (Shairul Kabir Khan), বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য, বলেন, “আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি তারা এখন অধীর আগ্রহে সময় গুনছি—কখন আমাদের বহুদলীয় গণতন্ত্রের মানসপুত্র, আধুনিক স্বনির্ভর রাষ্ট্র নির্মাণে স্বপ্নদ্রষ্টা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঢাকায় ফিরবেন। ইনশাআল্লাহ, দেশের মানুষ যেমন প্রত্যাশা করছে, তেমনি আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের নেতা হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবেন।”


