ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে গু’\লি করার ঘটনার মূল অভিযুক্ত শুটার ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা মো. হুমায়ুন কবিরকে গ্রে’\ফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন–র্যাব। একই সঙ্গে তার মা মোসা. হাসি বেগমকেও আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে র্যাব-১০ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) তাপস কর্মকার এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শুটার ফয়সালকে পালাতে ও আত্মগোপনে সহায়তার অভিযোগে বাবা-মার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
র্যাব জানায়, গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গু’\লি করে হ’\ত্যাচেষ্টা চালানো হয়। ঘটনাটি গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে আসামিদের গ্রে’\ফতারে র্যাব তাৎক্ষণিকভাবে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে। এ ঘটনায় ডিএমপির পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। মামলার নম্বর ১৯, তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫। মামলায় পেনাল কোডের ১২০বি, ৩২৬, ৩০৭, ১০৯ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৬ ডিসেম্বর ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে র্যাব-১০-এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ এবং আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আলোচিত এই হ’\ত্যাচেষ্টা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে শুটার ফয়সালের বাবা ও মাকে গ্রে’\ফতার করা হয়।
গ্রে’\ফতারকৃতরা হলেন মো. হুমায়ুন কবির (৭০), পিতা মৃত দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার এবং মোসা. হাসি বেগম (৬০), স্বামী মো. হুমায়ুন কবির। র্যাব জানায়, তাদের উভয়ের স্থায়ী ঠিকানা পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার কিশবপুর এলাকায়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে র্যাব জানায়, গ্রে’\ফতার হওয়া দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে শুটার ফয়সাল তৃতীয়। তিনি নিয়মিতভাবে রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় তার বোন মোসা. জেসমিন আক্তারের সাততলা বাসায় যাতায়াত করতেন। ঘটনার দিন রাতে একটি ব্যাগ নিয়ে ওই বাসায় ওঠেন তিনি। পরে ওই বাসার চিপা দিয়ে একটি কালো ব্যাগ ফেলে দেন। এরপর নিজের ভাগনে জামিল (১৮)-কে দিয়ে সেই ব্যাগটি আবার নিয়ে আসেন।
র্যাব আরও জানায়, ওই সময় শুটার ফয়সাল তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনের একটি বাসার ছাদ থেকে ফেলে দেন এবং অন্য মোবাইল ফোনটি তার মা মোসা. হাসি বেগমের হাতে তুলে দেন। এরপর সেখানে তিনি বাবা-মার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তবে নিজের অবস্থান নিরাপদ মনে না হওয়ায় শুটার ফয়সাল দ্রুত আগারগাঁও এলাকা ত্যাগ করেন। তিনি প্রথমে মিরপুরে যান এবং পরে শাহজাদপুর এলাকায় তার বাবা মো. হুমায়ুন কবিরের ভাতিজা আরিফের বাসায় আশ্রয় নেন। এ সময় শুটার ফয়সালের ব্যবহৃত ব্যাগ বহনের জন্য তার বাবা একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ভাড়া করে দেন এবং সঙ্গে কিছু টাকাও দেন বলে র্যাবের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
পরবর্তীতে শুটার ফয়সালের বাবা-মা তাদের ছোট ছেলে হাসান মাহমুদ বাবলু ওরফে রাজের কেরাণীগঞ্জের বাসায় গিয়ে ওঠেন। সেখানে অবস্থানকালে তারা জুরাইন এলাকা থেকে দুটি মোবাইল সিম কিনে ব্যবহার শুরু করেন বলেও র্যাব জানিয়েছে।
র্যাব বলছে, পুরো ঘটনায় শুটার ফয়সালের গতিবিধি, অবস্থান পরিবর্তন এবং পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা গভীরভাবে তদন্তের আওতায় রয়েছে। এই হ’\ত্যাচেষ্টা ঘটনায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।


