ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নিবে

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে নির্বাচনটি এককভাবে নাকি জোটগতভাবে করা হবে—সে বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি দলটি। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব তথ্য জানা গেছে।

দলের একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের নেতা জানিয়েছেন, বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টির একটি বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। এই সভায় দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতারাও অংশ নেবেন। মঙ্গলবার রাত দশটা পর্যন্ত পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সভাটি ঢাকার কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েই অনুষ্ঠিত হতে পারে।

এদিকে দলের চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি শৌর্য দ্বীপ্ত সূর্য গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার বিকাল চারটায় কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ওই সংবাদ সম্মেলন থেকেই জাতীয় পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম পাটোয়ারী (Barrister Shamim Patwary) বলেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে নমিনেশন সাবমিট করবো।” তার এই বক্তব্যে দলটির নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

এর আগে সন্ধ্যায় দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের (GM Quader) জানান, আপাতত তিনশ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে জাতীয় পার্টির। তবে দলের নেতারা এবং সম্ভাব্য প্রার্থীরা কী মতামত দেন, সেটিও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জাতীয় পার্টির অন্য একটি অংশও নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (Barrister Anisul Islam Mahmud)-এর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির একটি অংশ, আনোয়ার হোসেন মুঞ্জুর জেপিসহ মোট ১৮টি দল নিয়ে একটি নতুন জোট গঠিত হয়েছে। ওই জোটের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সম্প্রতি এক সভায় তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানান। তবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দেন তিনি।

জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে যাচ্ছে কি না—এই প্রশ্নটি এখন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে বিএনপি (BNP)। এমনকি কয়েকটি দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা জিএম কাদেরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে যেতে সম্মত এবং এই ধরনের জোটে আগ্রহী।

তবে সবকিছু মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির নির্বাচনে অংশগ্রহণ কোন পথে গড়াবে, তা নিয়ে এখনো সংশয় থেকেই যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী (Bangladesh Jamaat-e-Islami), গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ কয়েকটি দল নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, “নির্বাচনে আমরা এককভাবেও করার চিন্তা করছি। তিনশ আসনে আগে আমরা প্রার্থী নিশ্চিত করতে চাই। জোট হবে কিনা, কারও সঙ্গে যুক্ত হবো কিনা—এসব বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা হওয়ার পরই সিদ্ধান্ত হবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *