পিনাকী-ইলিয়াসের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপের দাবিতে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান

প্রবাসী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য এবং প্রবাসী সাংবাদিক ও ইউটিউবার ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি। ফ্রান্সের প্যারিসে বসবাসরত লেখক, শিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী জান্নাতুন নাঈম প্রীতি এ আহ্বান জানান।

ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের উদ্দেশে পাঠানো এক লিখিত অভিযোগে জান্নাতুন নাঈম প্রীতি উল্লেখ করেন, একজন লেখক, শিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী হিসেবে তিনি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছেন যে, ফ্রান্সে শরণার্থী হিসেবে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক পিনাকী ভট্টাচার্যের অনলাইন বক্তব্য ও কার্যক্রম বাংলাদেশের সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সহিং’\সতা ও ধর্মীয় উ’\গ্রবাদে উসকানির শামিল হতে পারে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, বিভিন্ন অনলাইন ভিডিও, লাইভ সম্প্রচার এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত কনটেন্টে পিনাকী ভট্টাচার্য বাংলাদেশে সহিং’\স জনতাকে উসকে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি তিনি ধর্মীয় উ’\গ্রপন্থী গোষ্ঠীসহ কিছু দলকে দেশের প্রধান গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে হা’\মলার জন্য উৎসাহিত করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এসব বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি সংবাদমাধ্যম—দ্য ডেইলি স্টার (The Daily Star) এবং প্রথম আলো (Prothom Alo)-এর কার্যালয়ে হা’\মলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগে দাবি করা হয়।

জান্নাতুন নাঈম প্রীতি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট হা’\মলার সময় ওই কার্যালয়গুলোতে সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে, যা তাদের জীবন ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

লিখিত অভিযোগে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে ফ্রান্স অতীতে চরমপন্থী সহিং’\সতার ভয়াবহ পরিণতি প্রত্যক্ষ করেছে, যার একটি দৃষ্টান্ত শার্লি এবদো হা’\মলা। তার ভাষায়, পিনাকী ভট্টাচার্যের কথিত কর্মকাণ্ড—যদি সেগুলো প্রমাণিত হয়—ফরাসি সংবিধান, ইউরোপীয় মানবাধিকার সনদ এবং শরণার্থী সুরক্ষাবিষয়ক নীতিমালার সঙ্গে স্পষ্ট সাংঘর্ষিক।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিনি কোনো বিচারবহির্ভূত বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ কামনা করেন না। বরং তার প্রত্যাশা, ফরাসি কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। বিশেষ করে—

এক) এসব কর্মকাণ্ড ফরাসি আইনে সহিং’\সতা, ঘৃণাত্মক বক্তব্য বা সন্ত্রা’\সবাদের উসকানির আওতায় পড়ে কিনা;

দুই) ফরাসি ভূখণ্ড ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বিদেশে সহিং’\স কর্মকাণ্ড পরিচালনায় ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা; এবং

তিন) এসব কর্মকাণ্ড শরণার্থী সুরক্ষার আইনগত ও নৈতিক দায়বদ্ধতা লঙ্ঘন করছে কিনা।

জান্নাতুন নাঈম প্রীতি আরও বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কখনোই সহিং’\সতা উসকে দেওয়া, সাংবাদিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন বা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান দুর্বল করার হাতিয়ার হতে পারে না। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার যেন আইনানুগ ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা গ্রহণ করে—এমন আহ্বান জানান তিনি। প্রয়োজনে অতিরিক্ত তথ্য, প্রমাণ ও নথি সরবরাহে তিনি প্রস্তুত বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *