ছাত্রীদের ভোটের পর ‘ফেলানী হলের’ দাবি থেকে সরে এসেছে ডাকসু , নামকরণ হচ্ছে ‘বীরপ্রতীক সিতারা বেগম হল’

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের ছাত্রীদের ভোটের পর ‘ফেলানী হল’ নামকরণ থেকে সরে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু)। হলটির সিংহভাগ ছাত্রীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ‘বীরপ্রতীক সিতারা বেগম হল’ নামকরণসহ তিন দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ডাকসুর নেতারা।

আজ রোববার দুপুরে ডাকসু ও হল সংসদের নেতৃবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশার কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। এতে ঢাবিতে থাকা শেখ পরিবারের পাঁচটি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়।

এর আগে শনিবার রাতে ডাকসু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম ‘শহীদ শরীফ ওসমান হাদী হল’ এবং ফজিলাতুন্নেসা হলের নাম ‘ফেলানী হল’ নামকরণের দাবিতে ভিসি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে হল সংসদ এর প্রতিবাদ জানায়।

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হলে পরে মেয়েরা হলের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক গ্রুপে ভোটের আয়োজন করেন। এতে ৯১ শতাংশ ভোট পড়ে বীরপ্রতীক সিতারা বেগম নামের পক্ষে। পরে ডাকসুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ ডাকসুর দাবি পরিবর্তনের কথা জানান।

স্মারকলিপি প্রদানকালে ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম, মুসাদ্দিক আলী ও সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের, ফজিলাতুন্নেসা হলের সাধারণ সম্পাদক মিফতাহুল জান্নাত, সহসাধারণ সম্পাদক রুপা আক্তার, শেখ মুজিবুর রহমান হলের ভিপি মুসলিমুর রহমান, জিএস মুশফিক মাহির উপস্থিত ছিলেন।

তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, শেখ পরিবারের পাঁচজনের নামে থাকা পাঁচটি স্থাপনা তথা শেখ মুজিবুর রহমান হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, সুলতানা কামাল হোস্টেল, কর্মচারীদের ভবন শেখ রাসেল টাওয়ার ও বঙ্গবন্ধু টাওয়ার’ এর নাম পরিবর্তন করা।

হল দুটির মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান হলকে ‘শহীদ ওসমান হাদি হল’ ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলকে ‘বীরপ্রতীক সিতারা বেগম হল’ নামকরণ করা।

এ বিষয়ে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, বিপ্লবের ১৬ মাস পার হলেও ঢাবিতে ফ্যাসিবাদের আইকন রয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদের নামে থাকা পাঁচটি হলের নাম পরিবর্তন করতে হবে; খুনি হাসিনার প্রশাসনের ভিসি মাকসুদ কামাল, প্রক্টর মাকসুদুর রহমান ও গোলাম রাব্বানী, শিক্ষক সমিতির নেতা জিনাত হুদা, আ ক ম জামালসহ ফ্যাসিবাদী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক মিফতাহুল জান্নাত রিফাত বলেন, হলের মেয়েদের আকাঙ্ক্ষা ছিল- মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসকে সবসময় পুরুষতান্ত্রিক লেন্সে দেখা হয়। সেই জায়গা থেকে একজন নারী মুক্তিযোদ্ধাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি মেয়েদের হলের নামের মধ্যে আমার হলের নামে যেন স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই জন্য আমার হলের বেশিরভাগ মেয়েদের ম্যান্ডেট বীরপ্রতীক ক্যাপ্টেন সিতারা বেগমের নামে আমাদের হলের নতুন নামকরণ করার পক্ষে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *