“আবেগের বশে মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, এটা আমার উচিত হয়নি”

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কু গতকাল ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেন তবে আজ তিনি জমা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নিজের বাসভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মনিরুল হক সাক্কু বলেন, বিভিন্নভাবে শুনেছি ইয়াছিন ভাইয়ের সমর্থকরা বলছেন তারা আজ নমিনেশন আনছেন, কাল আনছেন। এসব দেখে আমি আর সহ্য করতে না পেরে আবেগে পড়ে মনোনয়নপত্র কিনেছি। তবে এটা আমার ভুল হয়েছে, আমি দুঃখিত। আমি এই মনোনয়নপত্র জমা দিবো না এবং ইলেকশনও করবো না।

সংবাদ সম্মেলনে সাক্কু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দল যদি বিএনপির চেয়ারপারসন এর উপদেষ্টা ও সাবেক সাংসদ হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিনকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবেন।

তিনি বলেন, ইয়াছিন সাহেব সবসময় আমার কার্যক্রমে বাধা দিয়েছেন। তিনি আমার বিপরীতে ছিলেন। তাই তাকে মনোনয়ন দিলে আমি স্বতন্ত্র থেকে হলেও নির্বাচন করবো। তবে, ইয়াছিন সাহেব ছাড়া যাকেই দল মনোনয়ন দিক, আমি তার পক্ষেই কাজ করবো।

সাক্কু আরও জানান, তিনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অনুরোধ করেছিলেন, ভাই, আমাকে যদি দেন তবে দিতে পারেন। আর যদি না দেন, তাহলে মনিরুল হক চৌধুরী সাহেবকে দিলে ভালো হয়।

তিনি বলেন, আমি ওনাকে বলেছি, যদি আমার কথা রাখেন তাহলে আমি যেভাবে ইলেকশন করতাম, সেভাবেই ওনাকেও বিজয় এনে দিবো। মহাসচিব সাহেব আমার কথা রেখেছেন। মনির ভাই মনোনয়ন পেয়েছেন। আমি শুরু থেকেই ওনার সঙ্গে কাজ করছি।

মনোনয়নপত্র কেনার বিষয়ে সাক্কু বলেন, আমি দেখলাম ইয়াছিন ভাই বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগে গিয়ে নিজে মালা পড়ছেন, আবার মানুষকে মালা পড়িয়ে দিচ্ছেন। এমন উদ্ভট পরিস্থিতি দেখে আমার রাগ উঠে যায়। তাই আমি নমিনেশন পেপার কিনেছি। কিন্তু পরে বুঝেছি এটা আমার ভুল হয়েছে।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি বিএনপির মহাসচিব ও চেয়ারপারসনের কাছে চিঠি দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আপনারা তো এখন ক্ষমতায় নেই, আমাকে মেয়র বানাতে পারবেন না। দল যখন ক্ষমতায় আসবে তখন দেখা যাবে। এই দুইটা কথা বলে আমি আইসা পড়ছি। আমি আর কোনো চিঠি দিবো না।

এ ব্যাপারে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, এটা সাক্কুর একটি নিজস্ব কৌশল হতে পারে। তবে সে আমার পক্ষেই মাঠে কাজ করছে।

অন্যদিকে, হাজী ইয়াছিন বলেন, যে কেউ মনোনয়ন ফরম কিনতেই পারেন। এটা তো গণতান্ত্রিক অধিকার। তিনি আরও জানান, দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন তিনি এবং শেষ সময়ে পরবর্তী পদক্ষেপ দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৯ মে দলীয় শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মনিরুল হক সাক্কুকে বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। গতকাল রোববার সকালে (২১ ডিসেম্বর) তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কুমিল্লা-৬ (সদর ও সদর দক্ষিণ) আসনে নির্বাচনের জন্য প্রতিনিধির মাধ্যমে ফরম সংগ্রহ করেছেন এবং নিজে গিয়ে জমা দেবেন বলে ঘোষণা দেয়ার একদিন পরেই আবার তা প্রত্যাহার করে নেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *