আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতা নিয়ে তীব্র বিভাজনে পড়েছে এনসিপি (Nationalist Citizens’ Party – NCP)। একাংশ জামায়াতের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি ও জোটে যেতে আগ্রহী হলেও, দলের আরেক অংশ এর তীব্র বিরোধিতা করছে। বিরোধীদের শীর্ষ নেতাদের একজন মীর আরশাদুল হক বৃহস্পতিবার এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
সূত্র জানায়, সদ্য দেশে ফেরা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)–এর সঙ্গে এনসিপি বৈঠক করতে চাইলেও সময় পায়নি। তারেকের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় মনোনয়নপত্র জমার সময়ের আগেই কোনো বৈঠকের সম্ভাবনা নেই বলে জানা গেছে।
বিএনপি’র একাধিক সূত্র বলছে, দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর তারেক রহমান এখনো রাজনীতির অনেক অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে আপডেট নন। এই পরিস্থিতিতে আসন সমঝোতা নিয়ে সরাসরি আলোচনা না করাই দলের কৌশল। পাশাপাশি, আগেই জানানো হয়েছে—বিএনপি কারো সঙ্গে দর কষাকষি করবে না। বরং নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসবে, আসন ভাগাভাগির সুযোগ ততই কমবে। যেখানে আগে এনসিপিকে ১০-১২টি আসন দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল, তা এখন নেমে এসেছে ৭-এ, এবং আরও কমতে পারে।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী এনসিপিকে ৩০ থেকে ৩৫টি আসন ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, তারা এনসিপিকে লোকবল এবং আর্থিক সহায়তারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই মোহে এনসিপির একটি অংশ জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
কিন্তু এই উদ্যোগে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এনসিপির নারী নেত্রীরা। বৃহস্পতিবার আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম–এর বাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন—জামায়াতের সঙ্গে জোট হলে তারা দল ছেড়ে দেবেন। ফলে দলের নেতৃত্বও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।
এছাড়া, সরকার বিরোধী অভ্যুত্থান আন্দোলনের অন্যতম নেতা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া ও মাহফুজ আলম–ও জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে এনসিপির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের সঙ্গে সম্ভাব্য ভুল সমঝোতা এনসিপির ভাবমূর্তির জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে—বিশেষত নারী নেতৃত্বের বিদ্রোহ ও অভ্যন্তরীণ বিভক্তি যদি আরও বাড়ে।


