ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে গঠিত গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)–কে নিয়ে গঠিত এই জোট ভেঙে পড়ছে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে মতানৈক্যের কারণে।
নেতৃত্ব, আন্দোলনের কর্মসূচি এবং নীতিগত সিদ্ধান্তে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ আগেই ছিল। এর মধ্যেই এনসিপির জামায়াতের সঙ্গে ৫০টি আসন নিয়ে আলোচনায় বসা এবং এবি পার্টির এতে পূর্ণ সমর্থন জোটের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ তৈরি করেছে।
এনসিপির কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, জামায়াতের সঙ্গে ২০ থেকে ২৫টি আসন ছাড়ার বিষয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। কয়েক দফা বৈঠক হলেও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা এখনো প্রক্রিয়াধীন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে আরও দুই দিন লাগবে।”
এই প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করেই জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। দলটির প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, “বাংলাদেশ যেভাবে বিভক্ত হচ্ছে, তাতে আমরা একটি সংস্কারমূলক কাঠামো দাঁড় করাতে চেয়েছি—যেটি বি’\এন’\পি বা জামায়াত নয়, একটি স্বাধীন রাজনৈতিক শক্তি হবে। এনসিপি ও এবি পার্টি আমাদের সঙ্গে এসে জোটে যুক্ত হলেও এখনো কোনো ফাংশন হয়নি। এরমধ্যেই শুনছি এনসিপি জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতায় যাচ্ছে—আমরা এ পথে থাকব না।”
তিনি আরও বলেন, “চাইলে শুরুতেই আমরা বি’\এন’\পি’র সঙ্গে যেতে পারতাম। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য একটি এমন বলয় গঠন করা, যেটি দলনিরপেক্ষভাবে জনগণের কথা বলবে। যদি কেউ না থাকে, আমরা একাই হাঁটব।”
এদিকে এবি পার্টি এনসিপির সঙ্গে থেকে জামায়াতের সমঝোতায় সম্মতি জানালেও এই অবস্থান দলীয়ভাবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। তবে এই বিভাজন জোটটির ভবিষ্যৎ কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে।


