জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizen Party)-এর যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম দলটির নির্বাচনকালীন সকল কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্টে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান।
‘আমি খুব সংক্ষেপে কিছু বিষয় জানাতে চাই’ শিরোনামে দেওয়া পোস্টে নুসরাত তাবাসসুম লেখেন, “এনসিপি তার জন্মলগ্নে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছে—গণতন্ত্রের সুষম চর্চা, নয়া বন্দোবস্ত, মধ্যপন্থা, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা, সভ্যতা কেন্দ্রিক সাম্রাজ্য সম্প্রসারণ এবং সর্বোপরি বাংলাদেশপন্থা নিয়ে। এই প্রতিটা শব্দ আমি আমার মননে, মগজে এবং যাপনে ধারণ করি।”
তিনি উল্লেখ করেন, এনসিপি গঠনের সময় যে নীতিগত কাঠামো ছিল, সেটিই ছিল তাঁর রাজনৈতিক স্বপ্ন। দলটির ঘোষণাপত্র এবং আনুষ্ঠানিক দলিলপত্রগুলো সেই বক্তব্য বহন করত। কিন্তু দলটি বর্তমানে সেই মূল বক্তব্য থেকে সরে এসেছে বলে তার দাবি।
ফেসবুক পোস্টে তাবাসসুম বলেন, “আজ ২৮/১২/২০২৫, ঠিক ১০ মাস পর জামায়াতে ইসলামীসহ ১০ দলীয় জোটে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে অংশগ্রহণের মাধ্যমে, আমি মনে করি এনসিপির সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দ এবং নীতিনির্ধারকেরা নিজেরাই এনসিপির মূল বক্তব্য থেকে চ্যূত হয়েছেন।”
তিনি অভিযোগ করেন, আহ্বায়ক এবং অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের বারবার ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত জোট গঠন করে মনোনয়নপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে এক ধরনের ‘প্রবঞ্চনা’ করা হয়েছে।
এই অবস্থায় নিজের অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি নুসরাত তাবাসসুম, (যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি) নিজেকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচনকালীন সময়ে পার্টির সকল কার্যক্রম থেকে নিষ্ক্রিয় করছি। এবং অবস্থা পুনর্বিবেচনা ক্রমে যে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঘোষণা করছি।”
তাঁর এই ঘোষণার মাধ্যমে এনসিপির অভ্যন্তরীণ সংকট আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এর আগে দলের একাধিক শীর্ষ নেতা জামায়াত-সমঝোতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পদত্যাগ করেছিলেন। এবার নুসরাত তাবাসসুমের মতো একজন যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচনকালীন সময়ে সরে দাঁড়ানোয় এনসিপির ঐক্য ও নীতিগত অবস্থান নিয়ে আরও প্রশ্ন উঠতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।


