সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি আমলের নেতা মেজর (অব.) মনজুর কাদের (Maj. (Retd.) Monjur Kader) এবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। বিএনপি ছেড়ে সদ্য জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizen Party – NCP)-তে যোগ দিয়ে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে এনসিপির প্রাথমিক মনোনয়নও পেয়েছিলেন তিনি। ১০ ডিসেম্বর প্রকাশিত এনসিপির ১২৫ জন মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় তাঁর নামও ছিল। ২২ ডিসেম্বর তাঁর পক্ষে মনোনয়ন ফরমও তোলা হয়।
তবে শেষ মুহূর্তে জোটের আসন সমঝোতার কারণে এই আসনটি জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) কাছে ছেড়ে দিতে হচ্ছে এনসিপিকে, ফলে নির্বাচনী লড়াইয়ের ময়দান থেকে সরে দাঁড়াতে হচ্ছে মনজুর কাদেরকে।
এর আগে ৮ ডিসেম্বর বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে এনসিপিতে যোগ দেন মনজুর কাদের।
একইভাবে সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনে এনসিপির মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী দিলশানা পারুল এবং সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী প্রীতিকেও সরে দাঁড়াতে হচ্ছে। কারণ, এই আসনগুলোতেও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের মাঠে নামানো হচ্ছে। তবে সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনে এনসিপি থেকে এস এম সাইফ মোস্তাফিজকে ১০ দলের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম জানান, “১০ দলীয় সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিরাজগঞ্জ-৩, ৪ ও ৫ আসনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচন করবেন। সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে এনসিপির প্রার্থী নির্বাচন করবেন জোটের সমর্থনে।”
বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে ২৮ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ১০ দলীয় সমন্বয় কমিটির বৈঠকে। এরপর থেকে সিরাজগঞ্জে জামায়াত ও এনসিপি নেতারা নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
মনজুর কাদেরের রাজনৈতিক ইতিহাস বেশ বৈচিত্র্যময়। ১৯৮৬ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসন থেকে পরপর দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।
পরে ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টি ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন। এরপর পাবনা-১ ও সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে সিরাজগঞ্জ-৫ (সীমানা পুনর্বিন্যাসের পর) থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের কাছে মাত্র ২৫২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
এবার ওই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) আমিরুল ইসলাম খান আলিম। একই আসনে জামায়াত থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা নায়েবে আমির ও বেলকুচির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আলী আলম।
সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আরও কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মওলা খান বাবলু, যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।


