কয়েকদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের তরুণ নেতাদের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লক্ষ্য দেশে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠা করা। গত শুক্রবার নতুন এ দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছিলেন দলটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। তখন থেকে বেশ আলোচনায় বিষয়টি।
কিন্তু ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বলতে প্রকৃতপক্ষে তারা কী বোঝাতে চেয়েছেন-সেটা নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এবিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন নাহিদ ইসলাম। এই শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করলো দলটি।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেলেও আমাদের যে সার্বভৌমত্ব সেটি বারবার হুমকির মুখে পড়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ বারবার ভেঙে পড়েছে। আমরা একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান গড়ে তুলতে পারিনি। একটি একদলীয় সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিজম ও একদলীয় স্বৈরতন্ত্রের বীজ বপন করা হয়েছিল। সুতরাং আমরা বলেছি-একটি প্রজাতন্ত্র আমাদের গড়তে হবে। তার জন্য একটি সংবিধান ও গণপরিষদ নির্বাচনের প্রয়োজন। সেই জায়গা থেকে আমরা সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা বলেছি। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল, যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং গত ১৫ বছরে নানা জুলুম করেছে, তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এই বিচার বাংলাদেশের মানুষ দেখতে চায়। বিচারের পরে যে সংস্কার কার্যক্রম জাতীয় ঐক্যমত যে কমিশন রয়েছে দ্রুত জাতীয় সংলাপে গিয়ে আমাদের যে জুলাই সনদ এবং যে জুলাই ঘোষণাপত্র তা দ্রুত বাস্তবায়ন আমরা দেখতে চাই।’
উল্লেখ্য ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ধারণাটি ফ্রান্সের ইতিহাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। পোল্যান্ড, কোস্টারিকাসহ আরও কয়েকটি দেশের ইতিহাসের সঙ্গেও মিশে আছে এটি। এটি এমন একটি রাজনৈতিক ধারণা, যা বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সার্বিকভাবে এমন ধারণায় কোনো দেশে পূর্ববর্তী শাসনব্যবস্থার বদল ঘটিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বা শাসনকাঠামো গ্রহণ করাকে বোঝায়। বিপ্লব, অভ্যুত্থানসহ নানাভাবেই আসতে পারে এমন পরিবর্তন।