নারী নির্যাতন ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান জানিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের (Bangladesh Jatiyatabadi Chhatra Dal) কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব (Rakibul Islam Rakib) বলেছেন, “আমাদের বোন আছিয়াকে যারা ধর্ষণ করেছে, তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে। দ্রুততম সময়ে দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
মানববন্ধনে প্রতিবাদ
সোমবার (১০ মার্চ) হাইকোর্ট গেটের সামনে ছাত্রদলের উদ্যোগে “দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে” আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
নারী নির্যাতন ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ
রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “দিনের পর দিন নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আমরা শুধু গতানুগতিক বক্তব্য শুনতে পাচ্ছি। সরকারের সদিচ্ছার অভাব স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।”
তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ বছরে সমাজ ব্যবস্থা ভয়াবহভাবে ধ্বংস হয়েছে। আমরা এই ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। আমরা বিশ্বাস করি, তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর নেতৃত্বে যদি বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠিত হয়, তাহলে নারী নির্যাতন বন্ধ হবে এবং বিচার নিশ্চিত হবে।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির দাবি
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রাকিব বলেন, “আপনারা যতদিন ক্ষমতায় আছেন, অনুগ্রহ করে আজ থেকে আরও বেশি সচেষ্ট হন। প্রতিটি ধর্ষণ ও নিপীড়নের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করুন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করুন। তা না হলে আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবো।”
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির (Nasir Uddin Nasir) বলেন, “আমাদের মনে হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল সরকার। জনগণের সমর্থন পেয়েও তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে ব্যর্থ হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আপনারা দেখেছেন, মাগুরায় (Magura) মাত্র আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। নারীদের পোশাক নিয়ে অনেকে কথা বলেন, কিন্তু যদি পোশাকই সমস্যা হতো, তাহলে কীভাবে একটি শিশুও ধর্ষণের শিকার হয়? গত ১৫ বছরে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তার কারণেই গত সাত-আট মাসে নারী নির্যাতন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।”
ধর্ষণের শাস্তি কঠোর করলেও বিচারহীনতা বাড়ছে
নাসির উদ্দীন বলেন, “২০২০ সালে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছিল, কিন্তু বিচারের অভাবে ধর্ষণের ঘটনা কমেনি, বরং বেড়েছে। তাই আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সম্প্রতি আমরা দেখেছি, নারী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি তাকে থানায় তদবির করে ছাড়িয়ে নিয়েছে। একইভাবে, নতুন ছাত্র সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (Democratic Student Council)-এর এক কেন্দ্রীয় নেতা নারী নির্যাতনের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সংগঠনের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।”
নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, “সরকারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার এবং গোপন সংগঠনের নেতারা যারা এখনো নির্যাতনকারীদের রক্ষা করতে তদবির করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”