সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পেছনে ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য: প্রধান উপদেষ্টা

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার কারণ রাজনৈতিক: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর যে আক্রমণ সংঘটিত হয়েছে, তা ধর্মীয় নয় বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)।

তিনি বলেন, “আমাদের সরকার দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। দেশের প্রতিটি নাগরিকের বর্ণ, ধর্ম, জাতি এবং লিঙ্গ নির্বিশেষে মানবাধিকার রক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

মার্কিন সিনেটরের সঙ্গে বৈঠক

মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা (Jamuna)য় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন সিনেটর গ্যারি পিটার্স (Gary Peters)। বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় এবং দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

ড. ইউনূস সিনেটর পিটার্সকে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর পরিদর্শন করে ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রকৃত চিত্র দেখার আহ্বান জানান। এছাড়া, তিনি অন্যান্য মার্কিন রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক ও কর্মীদেরও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আলোচনা

সাক্ষাৎকালে সিনেটর পিটার্স বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, গুরুত্বপূর্ণ কমিশনের প্রতিবেদন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চান।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, রাজনৈতিক দলগুলো কম সংস্কারে সম্মত হলে সরকার ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন আয়োজন করবে। তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। এটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দিন বড় বড় উদ্যাপন হবে, যেমন আমরা অতীতে দেখেছি।”

প্রধান কমিশনগুলো প্রস্তাবিত সংস্কারে সম্মত হলে রাজনৈতিক দলগুলো ‘জুলাই সনদ’-এ স্বাক্ষর করবে বলেও জানান তিনি। এই জুলাই সনদ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেন ড. ইউনূস।

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা নিয়ে ভুল তথ্য

সিনেটর পিটার্স জানান, তার নির্বাচনী এলাকা মিশিগান (Michigan) ও ডেট্রয়েট (Detroit)-এ বসবাসকারী অনেক বাংলাদেশি সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “এই হামলা নিয়ে অনেক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যার কিছু অংশ যুক্তরাষ্ট্রেও পৌঁছেছে। এতে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।”

উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের আপনার সহায়তা প্রয়োজন। দয়া করে আপনার বন্ধুদের বাংলাদেশে ভ্রমণের আহ্বান জানান। এভাবেই আমরা ভুল তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে লড়তে পারবো।”

দারিদ্র্য বিমোচনে আলোচনা

বৈঠকে দুই নেতা সামাজিক ব্যবসা, দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গড়ার পরিকল্পনা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United States) ও অন্যান্য স্থানে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ক্ষুদ্র ঋণ (Microcredit) ব্যবহারের বিষয়েও আলোচনা করেন।


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *