চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অনুপস্থিতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ২১টি পদে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) সমর্থিত আইনজীবীরা ভাগাভাগি করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি আওয়ামী পন্থীদের।
আজ শুক্রবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা তারিক আহমেদ (Tariq Ahmed) জানিয়েছেন, ২১টি পদের জন্য ২১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এবং যাচাই–বাছাই শেষে সেগুলো সঠিক পাওয়া গেছে। তাই আগামীকাল শনিবার তাঁদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
ভাগাভাগির ফল: জয় নিশ্চিত বিএনপি-জামায়াতের
২১টি পদের মধ্যে ১৪টিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (Bangladesh Nationalist Party – BNP) সমর্থিত এবং ৭টিতে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা মনোনয়ন দিয়েছেন। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে আছেন—সভাপতি পদে আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কাজী মো. সিরু, অর্থ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, পাঠাগার সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফী বিনতে মোতালেব, ক্রীড়া সম্পাদক মঞ্জুর হোসেন এবং সদস্য পদে আহসান উল্লাহ, আসমা খানম, বিবি ফাতেমা, মেজবাহ উল আলম, রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী, রাহিলা গুলশান ও সাজ্জাদ কামরুল হোসেন।
জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—সহসভাপতি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনুস, সহসম্পাদক ফজলুল বারী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুল জব্বার এবং সদস্য পদে শাহেদ হোসেন, হেলাল উদ্দিন, রোবায়তুল করিম ও মোহাম্মদ মোরশেদ।
সভাপতি প্রার্থী আবদুস সাত্তার বলেন, “আইনজীবীদের কল্যাণ ও বারের দুর্নীতি রোধে কাজ করে যাব। রাজনীতি বারে আনব না।”
আগেই ছিল উত্তেজনা ও পদত্যাগ
এই নির্বাচনের পেছনে ছিল এক দীর্ঘ উত্তেজনাকর প্রেক্ষাপট। গত ১০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মুখ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলায়মান (Mohammad Solaiman)সহ পাঁচজন একযোগে পদত্যাগ করেন।
কারণ হিসেবে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা নির্বাচনকালে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (Border Guard Bangladesh – BGB) মোতায়েনের আবেদন করেন। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিতরা সমন্বয় পরিষদের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়ে পাল্টা আবেদন করে। পরিস্থিতির উত্তপ্ত পরিবেশে নির্বাচন স্থগিত হয়।
এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয় এবং দুই মাস পর নতুন তফসিল দিয়ে আজ মনোনয়নপত্র জমার মাধ্যমে ‘নির্বাচনবিহীন নির্বাচন’-এর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।