অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিল ‘জনতা’

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং অতীত কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে চরম অপমান ও সহিংসতার শিকার হলেন কৌতুক অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক (Siddiqur Rahman Siddiq)। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় একদল উত্তেজিত যুবক তাকে টেনে-হিঁচড়ে মারধর করে রাস্তায় হাঁটিয়ে রমনা থানায় নিয়ে যায়। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে—জামাকাপড় ছেঁড়া, চোখে পানি, আর মাথা নিচু করে কান্নারত অভিনেতা সিদ্দিককে ঘিরে উত্তেজিত স্লোগান: “আওয়ামী লীগের দোসর”।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাকে নেওয়ার সময়ও কেউ কেউ ধাক্কা ও চড়-থাপ্পর দেন। কেউ বাধা দিতে এগিয়ে আসেননি।

রমনা থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) আতিকুল আলম জানান, বর্তমানে সিদ্দিক থানার হেফাজতে রয়েছেন। তাকে গুলশান থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম (Masud Alam) সমকাল-কে বলেন, “বিকেলে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে স্থানীয় কিছু লোকজন তাকে আটক করে রমনা থানায় নিয়ে আসে।” তিনি আরও জানান, সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলা ও হত্যাচেষ্টার দুটি মামলা রয়েছে।

তবে মারধরের অভিযোগ বিষয়ে ডিসি মাসুদ আলম বলেন, “সঠিক তথ্য নেই। কেউ হয়তো ধাক্কা বা চড়-থাপ্পর দিয়ে থাকতে পারে। সেটা তো দেখে বোঝা যায় না।”

এই হামলার পেছনে কারা জড়িত, সে নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারীরা ছাত্রদলের নেতাকর্মী হতে পারে। তবে পুলিশ এখনো এ বিষয়ে নিশ্চিত নয়। মাসুদ আলম বলেন, “প্রথমে অল্প কিছু লোক ছিল, পরে আরও অনেকে এসে যোগ দেয়। তারা ছাত্রদলের কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।”

প্রসঙ্গত, সিদ্দিকের জন্ম টাঙ্গাইলের মধুপুরে। দীর্ঘ দুই যুগ ধরে তিনি কৌতুকাভিনয়ের মাধ্যমে পরিচিত হয়ে উঠেছেন দেশজুড়ে। পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগের (Awami League) রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেছেন। ঢাকা-১৭ এবং টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর ও ধনবাড়ি) আসন থেকে সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টাও করেন, যদিও ব্যর্থ হন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *