এনসিপির সমাবেশে সারজিসের উপস্থিতিতেই “সারজিস হঠাও” স্লোগান নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি

বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আয়োজিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)’র সমাবেশে উত্তেজনা চরমে ওঠে। বুধবার বিকেলে শহীদ টিটু মিলনায়তন চত্বরে (পৌর পার্ক) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (Sarjis Alam) উপস্থিত থাকার সময়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সারজিস আলমসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশস্থলে পৌঁছান। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি পক্ষ মিছিল নিয়ে প্রবেশ করে এবং সারজিস আলমের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে। স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে সারজিসের সমর্থকরা প্রতিক্রিয়া দেখান এবং এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল মারামারি শুরু হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, একপর্যায়ে মারামারি পুরো সমাবেশস্থল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব তাহসিন রিয়াজ (Tahsin Riaz), যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাকিব মাহদী (Sakib Mahdi), কেন্দ্রীয় নেতা নাজমুল ইসলাম (Nazmul Islam) ও সাদিয়া ফারজানা (Sadia Farzana) এক মিনিট করে বক্তব্য দেন। প্রধান অতিথি সারজিস আলম মাত্র চার মিনিট বক্তব্য দিয়ে মঞ্চ ত্যাগ করেন। এরপর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়, যা সাতমাথা এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মিছিলের সামনে-পেছনে পুলিশ মোতায়েন ছিল।

ঘটনাস্থলে থাকা বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মঈনুদ্দিন (SM Moinuddin) বলেন, সারজিস আলম মঞ্চে ওঠার পরই এনসিপির ভেতর থেকেই একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। অপর অংশ প্রতিবাদ করতে গেলে হাতাহাতি ও পরে মারামারি শুরু হয়। অবস্থা সামাল দিতে সারজিসের সমর্থকরা প্রতিপক্ষকে ধাওয়া দিয়ে সমাবেশ থেকে বের করে দেন।

এ বিষয়ে এনসিপির বগুড়া জেলার অন্যতম সংগঠক আহমেদ সাব্বির বলেন, ‘আজকের কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানানো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এনসিপি থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় এক নেতার কিছু উচ্ছৃঙ্খল সমর্থক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু নেতা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন।’ তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এনে সমাবেশের কাজ সম্পন্ন করা হয়।

টানটান উত্তেজনার মধ্যে সমাবেশ শেষ হলেও, এনসিপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে আসায় দলের ভাবমূর্তিতে নানাবিধ প্রশ্ন উঠেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *