“রাজনৈতিকভাবে অস্বাভাবিক অবস্থায় আছি”—নয়াপল্টনে মির্জা ফখরুলের সতর্ক বার্তা

“আজকে আমরা রাজনৈতিকভাবে একটা অস্বাভাবিক অবস্থায় আছি”—এমন মন্তব্য করে দেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)। বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টনে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের (Jatiyatabadi Sramik Dal) উদ্যোগে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “এখনো গণতন্ত্র উদ্ধার হয়নি। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পায়নি। আজ পর্যন্ত জনগণ ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের সংসদ কিংবা সরকার গঠন করতে পারেনি। এটা একটি রাজনৈতিক অস্বাভাবিকতা, যা থেকে আমরা সবাই ভুগছি।”

বিশ্বব্যাপী নন্দিত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ড. ইউনূস একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তাঁর প্রতি যে আচরণ করা হচ্ছে তা দুঃখজনক। আমরা বারবার বলেছি—প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করুন, তারপর একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। যে সংস্কারের কথা আজ বলা হচ্ছে, সেটি প্রথম বিএনপিই প্রস্তাব করেছিল।”

তিনি বলেন, “গণমাধ্যমের স্বাধীনতা শহীদ জিয়াউর রহমানই দেশে এনেছিলেন। আজ যে মিডিয়াগুলো কথা বলছে, তাদের জন্য সেই সংস্কারের ভিত্তি তিনিই গড়ে দিয়েছিলেন। তাই সংস্কার আমাদের দাবি, আমাদের সৃষ্টি। কঠিন সময়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যেগুলো দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সহায়ক।”

বিএনপি মহাসচিব এ সমাবেশ থেকে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যেসব সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য হয়েছে, তা অবিলম্বে কার্যকর করুন এবং দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আর যেসব বিষয়ে একমত হয়নি, তা পরবর্তী সংসদে আলোচনা করে বাস্তবায়ন করা যাক।”

তিনি সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উপেক্ষা করে কোনো চুক্তি বা সিদ্ধান্ত নেবেন না, যা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়।”

মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই শ্রমিক সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ বিএনপির অন্যান্য শীর্ষ নেতা। পুরো সমাবেশ জুড়েই ছিল গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার আহ্বান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *