‘শাপলা চত্বর ট্রাজেডি’ ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রে আবারও উঠে এসেছে ২০১৩ সালের হেফাজতে ইসলামের (Hefazat-e-Islam) সমাবেশে হতাহতের সংখ্যা। আজ শনিবার হেফাজতের বড় সমাবেশকে ঘিরে এই প্রসঙ্গটি নতুন করে সামনে আসে। এ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার (Azad Mazumder) তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে নিজের অনুসন্ধানমূলক অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন।
অনুসন্ধান: নিহত ৫৮, এর মধ্যে ৭ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য
আজাদ মজুমদার জানান, সেই সময় কতজন নিহত হয়েছিল তা নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা বিভ্রান্তি ছিল। তিনি এবং তৎকালীন বিবিসি ঢাকা প্রতিনিধি মার্ক ডামেট যৌথভাবে দুই সপ্তাহ মাঠপর্যায়ে কাজ করেন।
তাদের অনুসন্ধানে উঠে আসে, ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে’র সহিংসতায় অন্তত ৫৮ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে সাতজন ছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। এই তথ্যটি দীর্ঘদিন ধরে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
ঝুঁকি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ
আজাদ লিখেছেন, “সড়ক, হাসপাতালের রেজিস্টার, নিহতদের পরিবার এবং কবরস্থানে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়েছে। প্রতিটি মুহূর্তেই ভয়ে ছিলাম—না জানি কখন নিরাপত্তা বাহিনীর নজরে পড়ে যাই এবং নিখোঁজ হয়ে যাই।”
তিনি আরও জানান, নিরাপত্তার কারণে দীর্ঘ সময় নিজের পরিচয় গোপন রেখে কাজ চালিয়ে যেতে হয়েছিল। এমনকি তাঁর রিপোর্টগুলোতে নামও ব্যবহার করা হয়নি।
ইতিহাসে সাহসী অনুসন্ধানের গুরুত্ব
পোস্টে আজাদ মজুমদার বলেন, “যখন দেখি অন্য সাংবাদিকেরা আমার কাজকে উদ্ধৃত করেন, তখন সত্যিকারের আনন্দ পাই।”
তিনি আক্ষেপ করে উল্লেখ করেন, এক দশক পার হয়ে গেলেও শাপলা চত্বরে নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে রাষ্ট্রীয় কোনো নিরপেক্ষ তদন্ত বা ব্যাখ্যা প্রকাশ পায়নি।
তবে যারা সরাসরি মাঠে নেমে অনুসন্ধান করেছেন, তাঁদের সাহস এবং তথ্যভিত্তিক কাজই আজ এই ঘটনাকে ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিয়েছে।