পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার আবহে ভারত থেকে বাংলাদেশে নাগরিক পুশ-ইনের অভিযোগকে সরাসরি ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যায়িত করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান (Dr. Khilur Rahman)। বুধবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের (Towhid Hossain) সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. খলিল স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ভারত থেকে জোর করে মানুষ ঢুকিয়ে দেওয়া খবর আমরা পাচ্ছি। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
তিনি জানান, নয়াদিল্লির কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করে বলা হয়েছে— যদি সত্যিই তারা বাংলাদেশি নাগরিক হন, তবে যথাযথ আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া মেনে তাদের ফেরত পাঠাতে হবে। এমন ‘পুশ-ইন’ আচরণ কোনোভাবেই বৈধ নয়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও জানান, প্রতিটি পুশ-ইনের ঘটনায় বাংলাদেশ স্বতন্ত্রভাবে যাচাই-বাছাই করছে। বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে কুড়িগ্রাম ও খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় প্রায় শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়েছে বলে সরকার বিজিবি (BGB) থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে জানতে পেরেছে।
কুড়িগ্রাম জেলার জামালপুরের ৩৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের রৌমারী বিওপি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার সোহেল রানা জানান, সীমান্ত এলাকা থেকে ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের ভাষ্যমতে, বুধবার ভোরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) তাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে।
ড. খলিলুর রহমান বলেন, “আমাদের নীতিগত অবস্থান পরিষ্কার— যদি নিশ্চিত হয় যে তারা বাংলাদেশের নাগরিক, তাহলে তাদের গ্রহণ করা হবে। তবে সেটি হতে হবে যথাযথ ও আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে। পুশ-ইন কোনো পরিস্থিতিতেই বৈধ বা গ্রহণযোগ্য নয়।”
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এ ধরনের অস্বাভাবিক তৎপরতা ঘিরে কূটনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত মিলছে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে, বাংলাদেশের অবস্থান অনড়—নিজেদের নাগরিকের মর্যাদা ও আইনগত অধিকার নিশ্চিত করতেই সরকার এই বিষয়ে কঠোর হচ্ছে।