অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে আরেকটি ছায়া সরকার গড়ে উঠেছে বলে দাবি করেছেন গবেষক ও বিশ্লেষক জুকারনাইন সায়ের। নিজের ফেসবুক পোস্টে সায়ের জানান, অন্তত ৬ জন ব্যক্তিকে ঘিরে গঠিত হয়েছে এই গোপন কাঠামো, যাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোঃ এজাজ।
তিনি দাবি করেন, জনপ্রিয় উপদেষ্টাদের ঘিরে যত মুখরোচক গল্প প্রচার করা হয়, তার পেছনে আসল খেলায় ব্যস্ত থাকে এই ‘ছায়া সরকার’ নামের কাঠামো। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত রাখতে আলোচনায় আনা হয় সংশ্লিষ্ট নয় এমন ব্যক্তিদের, যাতে করে ছোটন গ্যাং নামে পরিচিত একটি দল চুপিসারে তাদের কুৎসিত উদ্দেশ্য সফল করতে পারে।
জুকারনাইন সায়েরের ভাষায়, “আজকে উন্মোচন করা হবে ছোটন গ্যাং-এর অন্যতম সদস্য মোঃ এজাজের পরিচয়, যিনি অত্যন্ত কৌশলে সরকারের অভ্যন্তরে স্থান করে নিয়েছেন।”
পোস্টে মোঃ এজাজকে নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে ধরা হয়। বলা হয়, তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীর-এর শীর্ষ নেতাদের একজন। ছাত্রজীবনে ইসলামি ছাত্র শিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার পর ২০০২ সাল থেকে হিজবুত তাহরীরের সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠেন। সংগঠনের হয়ে কাজ করতে গিয়ে তিনি দুইবার গ্রেপ্তার হন বলেও দাবি করা হয়।
বিশ্লেষক সায়ের আরও জানান, ২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চ (SB)-এর একটি স্মারক অনুযায়ী, হিজবুত তাহরীর বাংলাদেশের শীর্ষ নেতাদের তালিকায় মোঃ এজাজের অবস্থান ছিল পঞ্চম। একই বছর তাকে এবং আরও আটজনকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ১০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে এজাজ ও তার সহযোগীরা মামলার দায় থেকে খালাস পান। এরপর থেকেই তিনি হিজবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ তালিকা থেকে বের করার জন্য দেনদরবার শুরু করেন বলে দাবি করা হয়।
সবচেয়ে বিস্ময়কর অভিযোগটি হলো—ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে মোঃ এজাজের নিয়োগে কোনো ধরনের নিরাপত্তা যাচাই বা ছাড়পত্র নেয়া হয়নি। তার নিয়োগে ভূমিকা রেখেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং এক নারী উপদেষ্টা, যিনি নেপথ্যে থেকে তদবির করেছেন বলেও পোস্টে দাবি করা হয়।
সায়েরের দাবি অনুযায়ী, ছোটন গ্যাং একটি সুসংগঠিত নেটওয়ার্ক, যারা অন্তর্বর্তী সরকারের সুযোগে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে।
পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে, যদিও এই দাবির বিপরীতে সরকারি বা সংশ্লিষ্ট কারো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি।