গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur) বলেছেন, “জুলাই কারও বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়।” এই মাসকে ঘিরে কোনো রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠী একচেটিয়া দাবি করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বরং জুলাই এই দেশের আপামর জনগণের লড়াই-সংগ্রামের প্রতীক, যা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত চেষ্টার ফসল।
শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় নরসিংদী শহরের পৌর ঈদগাহ মাঠে গণঅধিকার পরিষদ নরসিংদী জেলা আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘সাম্য, মানবিক, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণের প্রত্যয়ে আয়োজিত এ সমাবেশে নুর স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে যেমন আওয়ামী লীগ নিজেদের একচ্ছত্র ঠিকাদারি বানিয়েছিল, তেমনি এখন কেউ কেউ ‘জুলাই’র গণঅভ্যুত্থানকেও তাদের রাজনৈতিক ধান্দাবাজির দোকানে রূপান্তর করতে চায়।”
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “এই ‘জুলাই’র আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে একটি নতুন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন করা। একটি এমন বাংলাদেশ, যেখানে কোনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না। যেখানে জনগণই হবে প্রকৃত ক্ষমতার উৎস।”
নুর আরও বলেন, “এই বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনগণের কাছে জবাবদিহিতার আওতায় থাকবেন। জনপ্রতিনিধিরা রাতের আঁধারে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ক্ষমতায় আসবেন না—তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবেন।”
তিনি এক ধরনের রাজনৈতিক ব্যবসা বা প্রচারণাকে সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, “জুলাইয়ের নামে যারা দোকান খুলে বসেছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে। যারা সত্যিকার সংগ্রামী, তাদের জাগ্রত থাকতে হবে এই পরিবর্তনের আন্দোলনে।”
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদ নরসিংদী জেলার সাবেক সভাপতি নান্নু মিয়া। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান (Rashed Khan), মুখপাত্র ও সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি কাউসার আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নীলা শেখ প্রমুখ।
জনতার শক্তিকে মূল ভিত্তি করে রাজনৈতিক মালিকানা ও চাতুর্যকে প্রত্যাখ্যান করার এই আহ্বান শুধু বক্তৃতায় সীমাবদ্ধ থাকেনি; বরং তাৎক্ষণিকভাবে মঞ্চে উপস্থিত সমর্থকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে এক ধরনের উদ্বেল আবেগ ও প্রত্যয়ের বার্তা।