ইশরাক হোসেন (Ishraque Hossain), বিএনপি (BNP) নেতা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বৈধ নির্বাচিত মেয়র হিসেবে স্বীকৃত ব্যক্তি, অভিযোগ করেছেন যে, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তার শপথ গ্রহণে বিলম্ব করছে। শনিবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ইশরাক বলেন, “নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ও নির্বাচন কমিশনের রায় এবং গেজেট প্রকাশ সত্ত্বেও আমাকে শপথ গ্রহণ করানো হচ্ছে না। এটি সম্পূর্ণভাবে আইনের লঙ্ঘন।” তিনি জানান, শপথের দাবিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হলেও সাড়া মেলেনি।
২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তিনি বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস জালিয়াতির মাধ্যমে বিজয়ী হন বলে অভিযোগ করেন ইশরাক। এরপর তিনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন এবং দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ আদালত রায় দেন—তাপসকে বৈধ ঘোষণা করা গেজেট বাতিল এবং ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র ঘোষণা করতে।
এ রায়ের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ২০২৪ সালের ২৭ এপ্রিল নতুন গেজেট প্রকাশ করে। আইন অনুযায়ী, গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে শপথগ্রহণ বাধ্যতামূলক হলেও ইতোমধ্যে ২০ দিন পার হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ইশরাক।
তিনি আরও বলেন, “আইনের স্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চুপচাপ বসে আছে। এ ধরনের নীরবতা কেবল আইনের প্রতি অবজ্ঞাই নয়, বরং জনগণের রায়কেও অস্বীকার করা।”
আদালতের রায় বাস্তবায়নে বিলম্বের পেছনে ‘প্রভাব খাটানোর’ চেষ্টার অভিযোগ করে তিনি বলেন, “তাপস আদালতে প্রভাব খাটিয়ে মামলা ঠেকাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা আইনি প্রক্রিয়া মেনেই জয় পেয়েছি। এখন এই রায় যারা অস্বীকার করছে, তারা আদালত অবমাননা করছে।”
সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক আরও অভিযোগ করেন, আইন উপদেষ্টা মতামত না দেওয়ার অভিযোগ করলেও, গেজেট প্রকাশে সব নিয়ম মেনেই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, “ফাইল তাদের টেবিলেই ছিল। ১০ কার্যদিবস পার হয়ে যাওয়ায় গেজেট স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ হয়েছে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই বিএনপি নেতা। বলেন, “এই উপদেষ্টা পরিষদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব কি না, তা নিয়ে জনগণের মনে প্রশ্ন রয়েছে। এমনকি এনসিপির পক্ষ থেকে বিচার বিভাগ নিয়েও বিষোদগার করা হচ্ছে।”
আন্দোলনের বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে ইশরাক বলেন, “চলমান আন্দোলন নিয়ে আমি কোনো নির্দেশ দেইনি বা সম্পৃক্ত নই। তবে জনগণের ন্যায্য আন্দোলনের অধিকার অস্বীকার করব না।”
শেষে তিনি নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান, দ্রুত তাকে শপথগ্রহণের ব্যবস্থা করে ডিএসসিসির দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে।